আন্তর্জাতিকখ্যাতি সম্পন্ন আইনজীবী, সংবিধান প্রণেতা ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন বলে জানা গেছে। বয়সের কারণে তিনি রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে চান এমন সিদ্ধান্তের কথা পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। গণফোরামের একাধিক সূত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এর আগে ২৬ সেপ্টেম্বর অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও মোস্তফা মহসিন মন্টু গণফোরামের বর্ধিত সভা করেন। সে সময় তারা বলেন, বর্ধিত সভায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সংগঠনকে শক্তিশালী ও গণমুখী করার লক্ষ্যে ২৬ ডিসেম্বর জাতীয় কাউন্সিল করব। এ লক্ষ্যে ১০১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এই গ্রুপকে ভারতপন্থী হিসেবে মনে করেন গণফোরামের তৃর্ণমূলের নেতারা। এই বর্ধিত সভার প্রতিবাদ করেন ২২ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণফোরামের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া। তবে ভারত বিরোধী হিসেবে পরিচিত ড. রেজা কিবরিয়া, শফিক উল্লাহ, অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ, সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের গ্রুপকে গণফোরামের মূলশ্রোত মনে করেন ড. কামাল হোসেন।
ভারতপন্থী হিসেবে পরিচিত নেতারা হুমকি দিয়েছেন ড. কামাল হোসেন আমাদের পক্ষ্যে না এলে তাতে দল থেকে বহিস্কার করা হবে। এমন হুমকিতে ড. কামাল হোসেন বর্তমানে চুপ রয়েছেন। দলটির একাধিত নেতা জানান, ড. কামাল দেশের রাজনীতি নিয়ে দলের ভেতরে এবং বাইরে কোনো কথায় বলছেন না। এমনকি তার গ্রুপের শীর্ষ নেতারাও চুপচাপ।
এসব বিষয় নিয়ে জানাতে ড. কামাল হোসেনের মোবাইলে কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। তবে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া সাংবাদিকদের বলেন, এই অবসরে যাওয়ার তথ্যটি আমি নিশ্চিত করতে পারবো না। তথ্যটি ড. কামাল হোসেনই বলতে পারবেন। তবে ড. কামাল হোসেন রাজনীতি থেকে অবসরে যাবেন এ কথা আগেও বলেছেন। স¤প্রতিও হয়তো বা বলেছেন।
১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানের হত্যাকান্ডের পর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ড. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বিএনপির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বিচারপতি আবদুস সাত্তারের বিরুদ্ধে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন। অতপর ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে দলের ভিতরে মতভেদের কারণে আওয়ামী লীগ ত্যাগ করে গণতান্ত্রিক ফোরাম গঠন করেন। অতপর গঠন করেন গণফোরাম। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের সমন্বয়ে গঠিত ঐক্যফ্রন্টের নের্তৃত্ব দেন ড. কামাল হোসেন।
গণফোরামের একাধিক নেতা জানান, স্যার (ড. কামাল হোসেন) পরিচ্ছন্ন রাজনীতি পছন্দ করেন। তিনি কাদা ছোঁড়াছুড়ির রাজনীতি করেন না। দলের ভিতরে যা চলছে তাতে তিনি বিরক্ত। এ অবস্থায় তিনি নেতৃত্ব থেকে অবসর নিতে পারেন। কারণ তিনি দলে থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে চাচ্ছেন না। তাহলে কী রাজনীতি থেকে বিদায় নিচ্ছেন ড.কামাল হোসেন?