তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুশিয়ারা নদীর তীর উপচে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে উপজেলার উত্তরভাগ ইউপি ওই গ্রামগুলোর ৬০০ পরিবার। নিচু এলাকার ঘরবাড়ি নিমজ্জিত হওয়ায় ভোগান্তিতে রয়েছেন তিন হাজার মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উত্তরভাগ ইউপি’র কুশিয়ারা নদীকূলের কামালপুর, চিক্কা, কেশরপাড়া, সুনামপুর, সুরিখাল ও আমনপুর এ ছয়টি গ্রামের নিচু বাড়িঘর নিমজ্জিত রয়েছে। গ্রামীণ রাস্তাঘাটসহ শাক-সবজির খেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
সুরিখাল গ্রামের মশাহিদ আলী বলেন, গত তিনদিন ধরে আমরা পানিবন্দি হয়ে পড়েছি। রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। এতে স্বাভাবিক চলাচল যোগাযোগ অনেকটা ভেঙে পড়েছে।
একই গ্রামের মুকন্দ বিশ্বাসের সাথে কথা বললে বলেন, আমার বাড়ির চারদিক জলমগ্ন হয়ে আছে। বাড়িটি উঁচু করে তোলায় রেহাই পেয়েছি। বাড়ির পাশে লাগানো ১০ শতকের ঝিঙ্গে, বরবটি ও ঢেঁড়স খেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
আমনপুর গ্রামের কুশিয়ারা পারের সুচিত্রা দেবী বলেন, আমরা ৩/৪ দিন ধরে পানিবন্দি। কেউ আমাদের দেখতে আসেনি কোন রকম সরকারী অনুদান ও এখন পর্যন্ত পাইনি।
আমনপুর গ্রামের বৃদ্ধা তছবিরুন বিবি (৬৫) বলেন, চারদিকে পানি আর পানি। তাই এখন আর গ্রামে গ্রামে গিয়ে ভিক্ষা করতে পারি না। হাঁটু সমান পানি ভেঙ্গে অনেক দূর যেতে হয়।
উত্তরভাগ ইউপি চেয়ারম্যান দিগেন্দ্র সরকার (চঞ্চল) বলেন, কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী কয়েকটি গ্রামে বন্যা দেখা দিয়েছে। আমরা বন্যার কথা প্রশাসনকে জানিয়েছি। এখনো কোনো ত্রাণ ও বরাদ্দ হয়নি।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) বাবলু সুত্রধর জানান, আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আখতারুজ্জামান বলেন, কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীকূলের বিষয়টি আমাদের দায়িত্বে পড়ে না। তবে নদীতে পানি বৃদ্ধির প্রভাবে কিছু গ্রাম প্লাবিত হতে পারে।