রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বলদীপুকুর নামক স্থানে যাত্রীবাহী দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ ছয় জনের মৃত্যুর ঘটনায় বাসচালককে দোষারোপ করেছেন দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা। যাত্রীদের দাবি, চালক ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলেই রবিবার (১৮ জুলাই) সকালের দুর্ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক যাত্রী। এদের মধ্যে ছয় জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
দুর্ঘটনার শিকার সেলফি পরিবহনের যাত্রী আমিনুল ও সালাম জানান, ড্রাইভার ঢাকা থেকে গাড়ি বেপরোয়াভাবে চালিয়ে আসছিল। বগুড়া পার হওয়ার পর ড্রাইভার ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। আমরা ড্রাইভারের পেছনে ছিলাম, কয়েক দফা তাকে সাবধানও করা হয়েছে। ড্রাইভার গাড়ি চালাতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ায় নিয়ন্ত্রণ হারান।
পুলিশ জানায়, রবিবার সকাল ৮ টার দিকে রংপুর থেকে জোয়ানা পরিবহন নামে একটি যাত্রীবাহী বাস ঢাকার উদ্দেশে যাচ্ছিল, বিপরীত দিক থেকে সেলফি পরিবহন নামে একটি যাত্রীবাহী বাস রংপুরের দিকে আসছিল। বাস দুটি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বলদীপুকুর নামক স্থানে পৌঁছালে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুই বাসের সামনে অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই সেলফি পরিবহনের ড্রাইভারসহ ছয় জন নিহত হন।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে।
ফায়ার সার্ভিসের রংপুরের উপ পরিচালক শামসুজ্জামান বলেন, আমরা ড্রাইভারসহ ছয় জনের লাশ উদ্ধার করেছি। আহত অন্তত ৪০ জনকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে ছয় জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আহতদের মধ্যে ৩০ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে ছয় জনকে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সামসুল।
আহতদের পরিচয় পাওয়া গেছে এরা হলেন গাইবান্ধার সুন্দরগজ্ঞ এলাকার রশিদুল ইসলাম, সাদুল্লাপুর এলাকার আবু বক্কর। বাকিরা হলেন নার্গিস আখতার, সেতারা বেগম, শাহিন ও জুয়েল। এদের ঠিকানা জানা যায়নি।
মিঠাপুকুর থানার ওসি আমিরুল ইসলাম জানান, থানা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সঙ্গে কাজ করেছে। নিহতদের কারোই পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি তিনি।