সিলেটের বিশ্বনাথে এক যুবলীগ নেতার আস্তানাসহ চারটি স্থান থেকে তিন পতিতা সম্রাজ্ঞীসহ ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। অন্য তিন আস্তানার মধ্যে দুটি হচ্ছে ওই যুবলীগ নেতার বাবা ও ভগ্নিপতির।
রুহেল খান নামে ওই যুবলীগ নেতা উপজেলা যুবলীগের আগামী সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী। তিনি যুক্তরাজ্য আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান গ্রুপের নেতা। বুধবার রাতে উপজেলা সদরের পুরাতন বাজারের গরুহাটায় থাকা যুবলীগ নেতা রুহেল খানের পতিতা আস্তানায় অভিযান চালায় পুলিশ। একই সময়ে তার বাবা ওয়ারিছ খান, ভগ্নিপতি সিরাজ মিয়া ও নতুনবাজার রাজনগর রোডের মানিক মিয়ার কলোনির আস্তানায়ও অভিযান চালানো হয়। এ চারটি স্থানে অভিযানে তিন পতিতা সম্রাজ্ঞীসহ ১০ জনকে আটক করে পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন- পতিতা সম্রাজ্ঞী খালেদা বেগম (৩৮), পেয়ারা বেগম (৪০), রোজি বেগম (৩২) ও তার স্বামী জালাল মিয়া (৩৫), পতিতা কলি বেগম (২৭), হোছনা বেগম (২০), সাহেনা বেগম (২২), মধুমা বেগম (৪২), তার স্বামী বাদশা মিয়া এবং নিলুফা বেগম (৪৪)।
স্থানীয়দের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে পতিতা সম্রাজ্ঞী খালেদা বেগম, রোজি বেগম ও পেয়ারা বেগম তারা তিনজন সদ্য বদলি হওয়া এসআই রফিক’সহ দুজন কর্মকর্তার ছত্রছায়ায় বিভিন্ন স্থান থেকে পতিতা এনে দেহ ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। তবে স্থানীয়রা অপর পুলিশ কর্মকর্তার নাম বলতে পারেননি। এসআই রফিক সব সময় পতিতা সম্রাজ্ঞী খালেদার আস্তানায় যাওয়া-আসা করতেন বলে জানান স্থানীয়রা।
জানা যায়, এসআই রফিক বিশ্বনাথ থানায় প্রায় ৬ থেকে ৭ বছরের পুরাতন কর্মকর্তা। একাধিকবার তার বদলি হলেও কৌশলে বদলি কাটিয়ে এই থানায় বহাল থাকেন। তিনি অনেক পুরাতন পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ায় এ ধরনের অপরাধীদের সঙ্গে তার সখ্য ছিল অনেক বেশি। কিন্তু রুহেল খান ও এসআই রফিকের হয়রানির ভয়ে স্থানীয়রা মুখ খুলতে পারতেন না।
গত ৩ এপ্রিল এসআই রফিকের বদলি হওয়ার পর ৪ এপ্রিল রাতেই এসব পতিতা আস্তানায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। মামলা দায়েরের পর বুধবার বিকালে তাদের সিলেট আদালতে পাঠানো হয় বলে জানায় পুলিশ। এদিকে আটককৃতদের কোর্ট থেকে ছাড়াতে যুবলীগ নেতা রুহেল খানের বাবা ওয়ারিছ খান আসামিদের কোর্টে চালান করার জন্য বারবার পুলিশকে তাগিদ দিতে দেখা গেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে যুবলীগ নেতা রুহেল খান তার কলোনিতে কোনো প্রকার দেহ ব্যবসা হয়নি বলে অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে জানতে এসআই রফিকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। বিশ্বনাথ থানার ওসি শামসুদ্দোহা বৃহস্পতিবার বিকালে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে সিলেট কোর্টে পাঠানো হয়েছে।
উৎসঃ যুগান্তর