তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলায় মোট চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আলোচনায় একটি আসন। অন্য বাকি তিনটি আসনে চলছে উত্তাপ বিহীন ভোটের প্রচার। কিছু আসনে প্রচার-প্রচারণায় মাঠে নৌকার প্রার্থী সরব ভূমিকায় থাকলেও প্রচারণায় মিলছে না অন্যান্য দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-২ কুলাউড়া আসনটিকে ঘিরে রয়েছে গুঞ্জন সাধারণ ভোটারদের মাঝে। কেননা, এই আসনে আসন্ন নির্বাচনে ত্রিমুখী লড়াই হবে বলে ধারণা জনমনে। কিন্তু, এ আসন ছাড়া মৌলভীবাজারের বাকি তিনটি আসনে ভোটের আমেজ অনেকটাই ভোটের আমেজ যেভাবে তৈরি হবার কথা তা নেই বললে ও চলে।
মৌলভীবাজার-১ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও ভোটের মাঠে প্রচারণায় আছেন শুধু নৌকার প্রার্থী বন জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাবুদ্দিন এমপি। জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে আহমেদ রিয়াজ উদ্দিনের পক্ষেও আসনের বিভিন্ন এলাকায় ব্যানার-পোস্টার টাঙানো হয়েছে। কিন্তু, স্বার্বিক প্রচারণায় বিবেচনা করে দেখা মিলে ব্যস্ত সময় পার করছেন শুধু নৌকার প্রার্থী। বাকি দুই প্রার্থীর পক্ষে তেমন কোন প্রচারণা নেই মৌলভীবাজার-১ আসনে।
মৌলভীবাজার-১ আসনের বাকি দুই প্রার্থীর মধ্যে একজন হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ময়নুল ইসলাম (ট্রাক প্রতীক) এবং তৃণমূল বিএনপির আনোয়ার হোসেন (সোনালী আঁশ প্রতীক)। তারা দু’জনই প্রচারণায় আছেন। তবে, ভোটারদের নজর কাড়তে পারছেন না তেমন একটা। ধারণা করা হচ্ছে এই আসনে বর্তমান সাংসদ শাহাবুদ্দিন এমপি আবারও নির্বাচিত হয়ে আসবেন। তাই ধরেই নিচ্ছন এই আসনে নির্বাচনের আমেজে কোনো নতুন উত্তাপ লাগেনি।
মৌলভীবাজার-৩ (মৌলভীবাজার সদর-রাজনগর) আসনের অবস্থাও অনেকটা একই রকম দঋশ্যপট। এই আসনে নৌকা প্রতীকের নতুন প্রার্থী মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানের পক্ষে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চলছে। মাইকে নৌকা মার্কার পক্ষে বাজছে জিল্লুর রহমানের গান। নিজেও সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে বিভিন্ন ইউনিয়নে গণসংযোগ করে ব্যস্ত সময় পার করছেন নব্য এ প্রার্থী। কিন্তু, চিত্রটা কিছু ঢিমে অন্যান্য প্রার্থীদের পর্যালোচনার ক্ষেত্রে।
মৌলভীবাজার-৩ আসনে নৌকার বিপক্ষে তেমন কোনো হেভিওয়েট প্রার্থী অংশ না থাকায় এখানে সব আলোচনা এক কেন্দ্রিক নৌকার প্রার্থীকে ঘিরেই। যদিও মৃদুমন্দ বা মন্দের ভালো প্রচারে মাঠ আছেন জাসদ এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল মোছাব্বির এবং মো. আলতাফুর রহমান। তবে, ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারছে না তারা। ফলে ভোটের মাঠ অনেকটাই স্বাভাবিক গতিতে চলছে।
মৌলভীবাজার-৩ আসনের মতো মৌলভীবাজার-৪ আসনেও নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার মত প্রার্থী না থাকায় ঢিলেঢালা নিয়মে চলছে এই আসনের ভোটের পরিবেশ। নৌকার প্রার্থী ছয় বারের এমপি উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ এ আসনের বারবার নির্বাচিত সাংসদ। এবারও তিনিই নির্বাচিত হবেন বলে জনমনে ঠাঁয় ধারণা। তাই, অন্যান্য প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় কিছুটা ভাটা পড়েছে বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা।
মৌলভীবাজার-৩ আসনের একজন ভোটার সঞ্জিত দাস বলেন, আমাদের আসনে নৌকার প্রার্থীকে ঘিরেই সব আলোচনা তুঙ্গে। এখানে প্রবাসী সিআইপি রহিমের পাওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তার প্রার্থিত না পাওয়ায় আপাতত নির্বাচনি মাঠ একপক্ষীক প্রচারণায় মুখরিত। তাছাড়া, অন্যান্য যেসব প্রার্থীর প্রচার চলছে তা খুব কম। নৌকার প্রার্থীর প্রচারণাই বেশি হচ্ছে শহরে।
মৌলভীবাজার-১ আসনের তরুণ ভোটার জালাল উদ্দিন ও জানান একই কথা। মৌলভীবাজার গনমাধ্যমকর্মীএ ভোটার বলেন, আমি ভোট প্রয়োগের সময়ে এমন টা দেখা হয়নি কখনও। সেজন্য ব্যক্তিগতভাবে ভোটের তফসিল ঘোষণার পর থেকে একটা আমেজের মধ্যে আছি। কিন্তু, ভোটের স্বার্বিক পরিবেশের কথা বললে আমাদের আসনে নৌকার প্রার্থীর বাইরে বাকি সবাই প্রচার-প্রচারণায় অনেকটাই পিছিয়ে আছেন। নিরব আছেন বলা যায়। ফলে ভোটের মূল আমেজটা পাওয়া যাচ্ছে না। প্রচার-প্রচারণায় সব প্রার্থী থাকলে আলোচনা সভা সমাবেশ, গুঞ্জন চায়ের দোকানর আডডা আরও বেশি থাকতো।
এদিকে, ভোটারদের নির্বাচনে ফেরাতে গণসংযোগ, পথসভা, উঠান বৈঠকের মতো কর্মসূচি প্রতিদিন করছেন নৌকার প্রার্থীরা। তারা ভোট দিতে আসার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন। সেই সঙ্গে বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে ভোট চাইছেন নৌকার পক্ষের প্রার্থীরা।