আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন—যারা নিজেদের সময় দেশে একটি মেগা প্রকল্প করার সাহস ও সক্ষমতা দেখাতে পারেনি, তারাই আজ মেগা প্রকল্প নিয়ে মেগা মিথ্যাচারে নেমেছে। এটা তাদের পরিকল্পিত অপচেষ্টা বলেও মনে করেন সেতুমন্ত্রী।
সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী আজ সকালে সচিবালয়ে তাঁর নিজ দপ্তরে ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিবের মেগা প্রকল্পের অভিযোগ কাল্পনিক মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা প্রতিহিংসাপরায়ণ ও ব্যর্থ এক বিরোধীদলের ঈর্ষাকাতরতা ছাড়া কিছু নয়।
বিএনপি বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম দেখে নিজেদের আমলের ব্যর্থতা ঢাকতে পরিকল্পিত মিথ্যাচার করছে বলেও মনে করেন সেতুমন্ত্রী।
‘অব্যাহত মিথ্যাচার করে দেশের ইমেজ নষ্ট করা বিএনপির লক্ষ্য’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নিজেরা ক্ষমতায় থাকাকালে দেশকে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছিল, আর এখন শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমে ঈর্ষান্বিত হয়ে দুর্নীতির গন্ধ খুঁজে বেড়ায়।’
এ ছাড়া ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি তাদের শাসনামলে দুর্নীতিতে বার বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার কলঙ্কতিলক দেশকে পরিয়েছিল, যা জনগণ এখনও ভুলে যায়নি।’
যারা হাওয়া ভবন নামের ‘খাওয়া ভবন’ তৈরি করে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল, মেগা প্রকল্প দেখলে তাদের মনোযন্ত্রণা হওয়াই স্বাভাবিক বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের পার্থক্য নিয়েও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকারের শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি স্পষ্ট ও কঠোর। যেকোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে নিজ দলের নেতাকর্মীদেরও ছাড় দেওয়া হয়নি। অপরদিকে, বিএনপি দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ তো দূরের কথা, গঠনতন্ত্র থেকে দুর্নীতিবাজদের অযোগ্যতা-বিষয়ক ধারা বাতিল করে আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজদের দল হিসেবে নিজেদের স্বীকৃতি দিয়েছে।’
এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে বলেন, ‘সাহস থাকলে আপনাদের গঠনতন্ত্রে দুর্নীতিবিরোধী ৭-ধারা ফিরিয়ে আনুন।’
একদিকে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে অন্যদিকে কল্পিত অভিযোগ করাকে জনগণ নৈতিকতাবিরোধী বলে মনে করেন বলে জানান ওবায়দুল কাদের।
বিএনপিকে উন্নয়নবিমুখ কথাসর্বস্ব রাজনৈতিক দল উল্লেখ করে সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, তাদের সময় বড় প্রকল্প নেওয়ার মানসিক সাহস সক্ষমতা ছিল না।
শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি দেশকে অদম্য গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক অবকাঠামো খাতে পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, টানেলসহ যে কয়টি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে, সেখানে কোনো দুর্নীতি হলে কাল্পনিক অভিযোগ না করে সুস্পষ্ট প্রমাণ দেওয়ার আহবান জানান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে চ্যালেঞ্জ করে ওবায়দুল কাদের বলেন ‘স্পেসিফিক (সুনির্দিষ্ট) প্রমাণ দিন—কোথায় দুর্নীতি হয়েছে?’
বিএনপিনেতাদের উদ্দেশ করে সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, ‘আসলে দুর্নীতিপ্রবণতা তাদের মগজে ও অস্থিমজ্জায় মিশে গেছে।’
বিএনপির শাসনামলে যে দুর্নীতি তারা করেছে, তা আজও বিএনপি ভুলতে পারেনি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি আবার সুযোগ পেলে জনগণের সম্পদ লুণ্ঠনের অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তু, জনগণ বিএনপির এ দুঃস্বপ্ন কখনও সফল হতে দেবে না।’