মানবপাচারকে আধুনিক দাসত্ব এবং সংঘবদ্ধ অপরাধ হিসেবে অভিহিত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতিরোধ কমিটিগুলোকে সক্রিয় হয়ে অন্যান্য সরকারি দপ্তর, বেসরকারি সংস্থা এবং প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একযোগে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন। তিনি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৮- ২০২২ এর নির্দেশনাগুলো মেনে চলারও নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে আয়োজিত ‘মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমনে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৮-২০২২ এর আলোকে গঠিত মানবপাচার প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের ভূমিকা ও করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ইউএসএআইডি’র অর্থায়নে উইন্রক ইন্টারন্যাশনাল’র বাস্তবায়নে বাংলাদেশ কাউন্টার ট্রাফিকিং-ইন-পারসন্স প্রোগ্রামের কারিগরি সহযোগিতায় এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি) মো. জাহাঙ্গীর আলম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. জয়নাল আবেদীন মোল্লা বলেন, কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশ যাওয়ার আগে অবশ্যই সম্ভাব্য অভিবাসী কর্মীদেরকে যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে বিদেশ যেতে হবে। এক্ষেত্রে দক্ষতার কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, মানবপাচার প্রতিরোধে সরকার জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ভিজিল্যান্স টাস্কফোর্স গঠন করেছে।
সর্বোপরি তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতা তৈরির মাধ্যমে মানবপাচার প্রতিরোধ সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রতিষ্ঠান) সৈয়দ মো. নুরুল বাসির মানবপাচারের শিকার সারভাইভারদের সমাজে মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে পুনঃএকত্রীকরণের বিষয়ে গুরত্বারোপ করেন। এক্ষেত্রে তিনি সকল সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, কমিটি ও স্থানীয় জনগণকেও অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করার আহ্বান জানান।
সভার শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন উইন্রক ইন্টারন্যাশনাল’র বাংলাদেশ কাউন্টার ট্রাফিকিং ইন পারসন্স (বিসি/টিআইপি) প্রোগ্রামের চীফ অব পার্টি মিস লিসবেথ জোনাভেল্ড। মানবপাচার প্রতিরোধ কমিটির দায়িত্ব-কর্তব্য, সদস্যদের প্রত্যাশা, উল্লেখযোগ্য অর্জনসমূহ, এবং কমিটির টেকসই এর লক্ষ্যে একটি বিশ্লেষণধর্মী উপস্থাপনা তুলে ধরেন ইনসিডিন বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক একেএম মাসুদ আলী।
আলোচনায় বিভিন্ন্ বিভাগের জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের মানবপাচার প্রতিরোধ কমিটি’র প্রতিনিধিবৃন্দ তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে খুলনা, রংপুর, রাজশাহী, ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন মানবপাচার প্রতিরোধ কমিটির সদস্যবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন জেলার স্থানীয় প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি, বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, গণমাধ্যম কর্মী এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ প্রায় ১২০ জন অংশগ্রহণ করেন।