ফরিদপুর প্রতিনিধি : মসজিদে আযানরত অবস্থায় মোয়াজ্জীন আছীর উদ্দিন ও তার পুত্র শহীদুলকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তার দায়ভার ছেলে শহীদুল ইসলাম এর ওপর চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও ভুক্তভোগী শহীদুলের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যাম ফেইসবুকসহ বিভিন্ন যায়গায় মিথ্যা সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে বলে জানা যায়।
ফরিদপুর নগরকান্দা উপজেলার লস্করদিয়া ইউনিয়নের গোড়াইল গ্রামের আছির উদ্দিন এর পুত্র লস্করদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ও জঙ্গি প্রতিরোধ কমিটির ইউনয়ন সদস্য শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকার ইকরাম সরদার, সাহেদ শেখ, এনায়েত শেখ, শফি প্রামানিক, হিরু মিয়া, মোস্তফা ব্যাপারিসহ বেশ কয়একজন ব্যাক্তি মিলিয়া, তাদের নিজ ব্যাক্তি স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে ও রাজনৈতিক ভাবে আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য পায়তারা করে আসছে। তিনি বলেন, নগরকান্দা উপজেলার গোড়াইল বাজারে দীর্ঘ দিন ধরে একটি মুদি দোকান করার সময় উক্ত নামধারী ব্যাক্তিদ্বয় একটি বড় অংকের চাঁদা দাবি করে এবং বলে যে এই বাজারে দোকান করতে হলে অবশ্যই আমাদের চাঁদা দিয়ে দোকান করতে হবে। এরই জের ধরে আমাকে বিভিন্ন ভয় ভিতি ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। পরে বাধ্য হয়ে কিছু চাঁদাবাজদের নামে নগরকান্দা থানায় একটি চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করি যাহার নং নগরকান্দা জিআর ২৯৩/১৮।
এরই জের ধরে উক্ত ব্যাক্তি দ্বয় আমার উপর চড়াও হয়ে বিভিন্ন সময় আমার ক্ষতিসাধন করার চেষ্টা করতে থাকে, এবং কয়একবার আমাকে মেরে ফেলার জন্য আক্রমন ও করে। এদিকে গত ১১ ই আগস্ট ২০২০ তারিখে উক্ত চাঁদাবাজির মামলা উঠানোর জন্য একই এলাকার সাগর ও সাদেক মাস্টারসহ আরো কয়একজন মিলে আমার বাড়িতে এসে ভয় দেখায়, এবং আমাকে বাড়িতে না পেয়ে প্রকাশ্যে আমার পিতা আছির উদ্দিন ফকিরসহ ঐ সময় উপস্থিত থাকা মহিলা সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে যায়, এবং প্রকাশ্যে হুমকি দিয়া বলে যে, শহীদুল এই চাঁদাবাজির মামলা না উঠিয়ে নিলে ওকে যেখানে পাওয়া যাবে, সেখানেই মেরে ফেলে লাশ গুম করে ফেলা হবে। অবশেষ গত ১৩ আগস্ট পুনরায় সাদেক মাস্টার, আক্রাম সরদার, সাগর সরদার, সোহেল সরদার, বক্কার ফকির, জামাল শেখ, বতু শেখ, কুব্বাদ, এনায়েত সরদার, দেলো সরদারসহ আমাকে মেরে ফেলার জন্য হামলা করতে এলে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় মসজিদের ভিতরে আশ্রয় নিলে, হামলাকারিরা মসজিদের ভিতরে ঢুকে পরে। পরে আমার পিতা মসজিদে আজানরত অবস্থায় থাকায়, তার পাশে গিয়ে লুকাতে গেলে উক্ত ব্যাক্তিদ্বয় আমাকে উদ্দেশ্য করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। কিন্তু ভুলক্রমে আমার পিতা ঐ আঘাতে আহত হন। পরে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার জন্য পুনরায় রানদা এবং ছুরি দিয়ে আঘাত করলে আমি গুরুতর জখম হই। আমার ডাকচিৎকারে এলকাবাসি এগিয়ে আসলে হামলাকারিরা পালিয়ে যায় এবং আমাকে ও আমার পিতাকে প্রাথমিক ভাবে নগরকান্দা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে উক্ত বিষয় নিয়ে হামলাকারিরা গ্রামবাসির কাছে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে যে, আমি আমার মোয়াজ্জিন পিতাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করি, যা সম্পুর্ন মিথ্যা ভিত্তিহীন ও গুজব। পরে এ নিয়ে উক্ত হামলাকারিরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করলে পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করে। আমি জামিনে বের হয়ে দেখি উক্ত ব্যাক্তিদ্বয় আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে এলাকায় বেশ কিছু পোস্টার ছাপায়। তাই আমার নামে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করার জন্য উক্ত ব্যক্তিদ্বয়ের নামে আরো একটি মামলা করি, যার নং ০৯/২০।
তিনি আরো জানান, এই কুচক্রি মহল বর্তমানে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ বিভিন্ন হুমকি দিয়ে আসছে। যে কোন সময় আমার বড় ধরনের ক্ষতিসাধন ও করতে পারে। এব্যাপারে ভুক্তভোগি শহীদুলের পিতা মোয়াজ্জীন আছীর উদ্দিন জানান, আমার ছেলের সাথে কোন বিষয় নিয়ে কোন দিন ঝামেলা সৃষ্টি হয়নি। আমাকে জখম করার ব্যাপারে আমার ছেলে শহীদুল দায়ী নয়, আর কেন সে আমাকে কোন অভিযোগ ছাড়াই জখম করবে। যদি আমাদের পারিবারিক কোন বিষয় থাকে সেটা আমরা পারিবারিক ভাবেই পদক্ষেপ নিব। এখানে ৩য় পক্ষের কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনা। আমার ছেলের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে তা সম্পুর্ন মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। তাই এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট সঠিক তদন্ত পুর্বক দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগি শহীদুলসহ এলাকাবাসি।