এনামুল হক রাশেদী, চট্টগ্রামঃ বাংলাদেশের নির্বাচনে কালো টাকার প্রভাব ও পেশি শক্তির প্রভাব অস্বিকার করা যাবেনা, কিন্তু নির্বাচনী আচরনবিধি বহির্ভূত যেকোন ধরনের অপতৎপরতা রোধে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর হতে হবে। ৭ জানুয়ারীর ভোটার যে বাক্সে ভোট দেবেন, সে বাক্সেই থাকবে, এক বাক্সের ভোট অন্য বাক্সে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তাদের সাথে প্রধান নির্বাচন কমিশনার(সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের মতবিনিময় সভায় সিইসি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। সভায় চট্টগ্রামের ১৬ টি আসনের অধিকাংশ প্রার্থীরা সিইসি’র সামনে পাহাড়সম অভিযোগ উপস্থাপন করেছেন।
২৬ ডিসেম্বর’২৩ ইং মঙ্গলবার সকাল ১০ টার সময় চট্টগ্রাম নগরীর এলজিইডি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন’২০২৪ এর চট্টগ্রামের প্রতিদ্বন্দ্ধী প্রার্থীদের সাথে মত বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতি ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ তোফায়েল ইসলামের সভাপতিত্বে মত বিনিময় সভায় বিশেষ অথিতি ছিলেন, নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ জাহাঙ্গির আলম। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা ও চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রথমে চট্টগ্রামের ১৬ টি আসনের বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্ধী প্রার্থীদের বিভিন্ন অভিযোগ শুনেন। এসময় চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে বিশেষ করে চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই), চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ), চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী), চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা), চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া),চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) এবং চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এবং প্রার্থীর সমর্থকেরা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে। সিইসি এসব অভিযোগের ব্যাপারে নিরপেক্ষভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশনা দেন।
প্রধান অথিতির বক্তব্যে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনে কালো টাকার প্রভাব ও পেশি শক্তির প্রভাব অস্বিকার করা যাবেনা, কিন্তু নির্বাচনী আচরনবিধি বহির্ভূত যেকোন ধরনের অপতৎপরতা রোধে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর হতে হবে। ৭ জানুয়ারীর ভোটার যে বাক্সে ভোট দেবেন, সে বাক্সেই থাকবে, এক বাক্সের ভোট অন্য বাক্সে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, ভোট কেন্দ্রের সর্বময় সুপ্রিম ক্ষমতা হচ্ছে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার। ভোটকেন্দ্রে আনঅথরাইজ কোন অনুপ্রবেশকারী যাতে ঢুকতে না পারে এবং পেশিশক্তি প্রয়োগ করে কেউ যদি ঢুকেও যায় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী জিরো টল্যারেন্সে সেই অনুপ্রবেশকারীকে আইনে সোপর্দ্দ করতে বিন্দুমাত্র কুন্ঠাবোধ করবেনা। নির্বাচনী প্রচারনা শুরু হওয়ার পর থেকে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, হাঙ্গামা, জ্বালাও পোড়াও, পোস্টার ছিড়া, আক্রমানত্বক কথা ও বক্তব্য সহ বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বিকার করে সিইসি আরো বলেন, ৭ জানুয়ারীর পুর্ব পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে যে যাই করুন, তা আইন শৃংখলা বাহিনী কঠোর হস্তে দেখবে, কিন্তু ৭ জানুয়ারী নির্বাচনী ফলাফল ঘোষনা পর্যন্ত সময়টা হতে হবে দৃষ্ঠান্তমুলক। এক কথায় মাঠের ভোটাররা যে যাই বলুক ভোট কেন্দ্রে কোনরকম অনিয়ম বিন্দুমাত্র সেক্রিফাইজ করা হবেনা।
এলজিইডি মিলনায়তনে সভা শেষে সাংবাদিকদের কোন ব্রিফ না করে চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে মতবিনিময় করতে এলজিইডি ভবন থেকে পিটিআইর উদ্দেশে রওয়ানা হন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীরা সিইসির বক্তব্য নিতে চাইলে তিনি পরবর্তী সভা শেষে দিবেন বলে জানান।