
নারী প্রগতির কথা শুনতে পাওয়া যায় ভারতের আনাচে–কানাচে। মিটিং, মিছিল, সেমিনারে। সোমবার বাংলার মন্ত্রিসভার শপথেও আট মহিলা মন্ত্রী। তবু এদেশে নারীকে আজও সতীত্বের পরীক্ষা দিতে হয়। ভার্জিনিটি টেস্টে ফেল করলে বিয়ে ভেঙে যায়। সরকারি পঞ্চায়েত এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেয়। হ্যাঁ, এমন ঘটনাই ঘটেছে মহারাষ্ট্রে। দুই বোনের বিয়ে হয়েছিল একই পরিবারের দুই ভাইয়ের সঙ্গে।
তারা জানতো না শ্বশুরবাড়িতে কী নির্মমতা অপেক্ষা করে আছে তাদের জন্য। ফুলশয্যার আগে বাড়ির মহিলারা দুই বোনকে নিয়ে যায় আলাদা ঘরে। পরীক্ষা করে দেখা হয়, তাদের সতীচ্ছদ অথবা হাইমেন অটুট আছে কিনা! বাড়ির মেয়েরা শাশুড়ির উপস্থিতিতে এই পরীক্ষা করেন। পরীক্ষায় দুই বোনই ডাহা ফেল করেন। সঙ্গে সঙ্গে পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হয় পরিবার। বিজ্ঞ পঞ্চায়েত সদস্যরা মতামত দেন, দুই বোনই অসতী। তাদের চরিত্র ভালো নয়। তাই বিয়ে ভেঙে দেয়ার নির্দেশ দেয় পঞ্চায়েত। ফুলশয্যার আগেই বিয়ে ভেঙে দেয়া হয়। দুই বোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই স্বামী পরিত্যাক্তা হয়ে ফিরে আসে নিজেদের বাড়িতে। পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ জানাতেই টনক নড়ে। ভারতে সতীত্বের পরীক্ষা অথবা ভার্জিনিটি টেস্ট বেআইনি। পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে শাশুড়ি ও পঞ্চায়েত সদস্যদের। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, হাইমেন অটুট থাকলেই সতী আর না থাকলেই অসতী- এই ধারণার কোনও ভিত্তি নেই। দৌড়াদৌড়ি, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো, খেলাধুলার কারণেও হাইমেন বা সতীচ্ছেদ ছিঁড়ে যেতে পারে। কেবলমাত্র যৌনমিলন হলেই হাইমেন ছিঁড়ে যায় এই ধারণার কোনও ভিত্তি নেই।
যে দেশে নারী আজ প্রধানমন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী হয়, যে দেশের নারী এরোপ্লেন চালায়, মহাকাশে যায়, সেই দেশের নারীকে আজও ভার্জিনিটি টেস্ট এর সামনে পড়তে হয়। জানকীর আর্তনাদ আজও কি শুনতে হবে ভারতকে!