ভারতের মুসলমানদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তুচ্ছ কারণে বা কারণ ছাড়াই সেখানে প্রায়ই মুসলিমদেরকে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনায় শীর্ষে রয়েছে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ রাজ্য। সম্প্রতি সেখানকার বরেলি জেলায় কয়েকদিনের ব্যবধানে ২ মুসলিমকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী যোগি আদিত্যনাথ নিজে একজন পুরোহিত। ফলে, রাজ্যটিতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনাগুলোতে কোন বিচারই হয়না। গত শুক্রবার সেখানকার বরেলি জেলায় ওয়াজিদ খান নামে ৩০ বছরের এক যুবককে চুরির অভিযোগে গাছে বেঁধে নির্মমভাবে পেটানো হয়। তখন প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেই প্রতিবাদ তো দূরের কথা, উল্টো মারধরের ভিডিও করতেই ব্যস্ত ছিলেন। পরে শনিবার তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। কিন্তু, তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না থাকায় কোন চিকিৎসা না করিয়েই তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। শেষে এক আত্মীয় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে রোববার মৃত্যু হয় তার। ওয়াজিদের মায়ের অভিযোগ, ‘শুধু মজা পেতেই আমার ছেলেটাকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হলো।’
পুলিশের খাতায় কোন অভিযোগ না থাকায়, এই ঘটনার কোন তদন্ত হওয়া তো দূরের কথা, প্রকাশ হওয়ারই কোন সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু, ঘটনাটির ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে এবং তদন্তে নামতে বাধ্য হয় পুলিশ। যদিও, এ ধরনের ঘটনায় কখনোই অপরাধী খুঁজে পায়না ভারতের পুলিশ।
দিন কয়েক আগেই এই বরেলিতেই ঘটেছিল একই রকম আরেকটি ঘটনা। মহিষ চোর সন্দেহে শাহরুখ (২০) নামের এক মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনারও কোন বিচার হয়নি। গত কয়েক বছরে, ভারতজুড়ে গরু চুরি ও পাচারের অভিযোগে মুসলিমদেরকে পিটিয়ে হত্যার অসংখ্য ঘটনা সংবাদমাধ্যমগুলোতে এসেছে। কিন্তু, হিংসা রোধে সরকার কোন ব্যবস্থা নেয়নি। সূত্র: মুম্বাই মিরর।