আবদুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধিঃ ভারতের এক স্থায়ী বাসিন্দার কাছ থেকে জমি খরিদের জাল দলিল বানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দেবহাটার কুলিয়াতে জামাল উদ্দীন গাজী নামের এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে ২ একর ৮৭ শতক জমি ভোগদখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তিনি দেবহাটার দক্ষিণ কুলিয়া গ্রামের এলাহী বক্স গাজীর ছেলে।
অভিযুক্ত জামালউদ্দীনের ভাই সইলউদ্দীনসহ স্থানীয়রা জানান, কুলিয়া মৌজার এসএ ৮৪২ খতিয়ান মোতাবেক সুবর্ণাবাদ এলাকায় ৫০৫৮ দাগে ৮ একর ৫৭ শতক জমির উত্তরাধিকার সূত্রে মালিক এলাহী বক্স গাজীর তিন ছেলে সইলউদ্দীন গাজী, বদরউদ্দীন গাজী, জামাল উদ্দীন গাজী, মেয়ে করিমন নেছা এবং বোন আরমান বিবি। স্বাধীনতা যুদ্ধের আগেই আরমান বিবি ও তার স্বামী এসহাক গাজী প্রতিবেশি দেশ ভারতে চলে যান এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বশিরহাট থানার অর্ন্তগত পরশকাটিতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। এরপর আর কখনো আরমান বিবি বাংলাদেশে ফিরে আসেননি। এসএ খতিয়ানেও আরমান বিবির ভারতের ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে। খতিয়ানে অংশ ভিত্তিক আরমান বিবির জমির পরিমান ২ একর ৮৭ শতক। আরমান বিবি বাংলাদেশে ফিরে না আসায় তার অংশের জমি তার তিন ভাতিজা বদরউদ্দীন, সইলউদ্দীন ও জামালউদ্দীনের ভোগদখলীয় জমির মধ্যেই ছিল। কিন্তু তিন ভাইয়ের মধ্যে সুচতুর জামাল উদ্দীন ভারতে বসবাসরত তার ফুফু আরমান বিবির স্থলে অন্য কোন নারীকে ফুফু সাজিয়ে এবং আরমান বিবির ঠিকানা ভারতের পরিবর্তে বাংলাদেশের কুলিয়াতে দেখিয়ে ১৯৭৯ সালে গোপনে জাল দলিল করে নেয়। সাম্প্রতিক সময়ে বদরউদ্দীনের মৃত্যুর পর উক্ত জমি নিয়ে সইলউদ্দীন ও জামাল উদ্দীন ও তাদের উত্তরসূরীদের মধ্যে গোলযোগ সৃষ্টি হলে জামালউদ্দীন আকর্ষিক উক্ত জাল দলিলটি সামনে এনে গোটা সম্পত্তি নিজের দাবী করতে শুরু করে। সইলউদ্দীন গাজী প্রশ্ন করে বলেন, যেখানে আমাদের ফুফু আরমান বিবি স্বাধীনতা যুদ্ধের আগেই ভারতে বসবাস শুরু করেন এবং পরবর্তীতে তিনি কখনো দেশে ফিরে আসেননি, তাহলে কিভাবে ১৯৭৯ সালে আমার ভাই জামালউদ্দীনকে তিনি তার অংশীয় জমি লিখে দিতে পারেন। তাছাড়া তিনি ভারতের স্থায়ী নাগরিক থাকলেও, জামাল উদ্দীনের ওই জাল দলিলে তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা আইনানুযায়ী ভারতীয় নাগরিক ও তার ফুফু আরমান বিবির অংশীয় উক্ত জমির জাল রেজিস্ট্রি কাগজ বাতিল করে সরকারের দখলে নেয়ার দাবী জানান।
এব্যাপারে কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেন ও ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিধান সরকার জানান, উক্ত জমি নিয়ে জামালউদ্দীন ও সইলউদ্দীন সহ অন্যান্য ওয়ারেশগনের মধ্যে গোলযোগের সৃষ্টি হলে বিষয়টি আমরা জানতে পারি। পরবর্তীতে খোঁজখবর নিয়ে জেনেছি আরমান বিবি স্বাধীনতার আগেই ভারতে পাড়ি দিয়েছিলেন এবং সেখানে স্থায়ী ভাবে বসবাস করেছেন। ভারতে তার পরিবার পরিজনদের সাথে যোগাযোগ করেছি, তারাও বলেছেন আরমান বিবি কখনো ভারত থেকে বাংলাদেশে এসে জামালউদ্দীনকে জমি লিখে দেননি। তারা বর্তমানে ভারতে ভালো আছেন, তাদেরও ওই জমির ওপর কোন দাবী নেই। তারাও চান জমিটি বাংলাদেশ সকারের অনূকূলে ফিরে যাক।