দুবাই প্রবাসী মেহেদী হাসানের সোয়া ১১ লাখ টাকা দামের দুটি সোনার বার খোয়া যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে। শাহজালাল বিমানবন্দরে এসে সেই সোনার বারের জন্য শুল্ক দিতে হয় আরও ৪০ হাজার টাকা।
আর সেই সোনার দুটি বার কাস্টমস জোন থেকেই খোয়া যায়। প্রবাসী মেহেদী বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের (এপিবিএন) কাছে অভিযোগ দেন। ১৩ দিন পর ফেনী থেকে ২৩২ গ্রামের সোনার বার দুটি উদ্ধার করে মেহেদী হাসানের কাছে তুলে দেয় বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ।
মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) রাতে জাগো নিউজকে বিষয়টি জানিয়েছেন বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ মার্চ সকালে দুবাই থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন মেহেদী হাসান। ইমিগ্রেশন শেষ করে বেল্ট থেকে ব্যাগ নিয়ে কাস্টমস জোনে যান তিনি। সে সময় কাস্টম কর্মকর্তারা তাকে তল্লাশি ও জিঙ্গাসাবাদ করে। মেহেদী কাস্টম কমকর্তাদের জানান, তার কাছে দুটি সোনার বার আছে এবং তিনি শুল্ক দেবেন।
সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা শুল্ক পরিশোধ করেন মেহেদী। গ্রিন জোন থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় এক কাস্টমস কর্মকর্তা মেহেদীকে আবারও তল্লাশি করতে ডাকেন।
মেহেদী জানান, তিনি সোনার বার এনেছেন এবং শুল্ক দিয়েছেন। তাকে সোনার বার দুটি স্ক্যানারে দিতে বলা হয় এবং তাকেও বডি স্ক্যানারের ভেতর দিতে যেতে বলা হয়। কাস্টম কর্মকর্তাদের তল্লাশি শেষ গ্রিন জোন থেকে বের হয়ে আসেন মেহেদী।এরপর মেহেদী হাসান বের হয়ে আসেন বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবন থেকে। গাড়ি পার্কিং এলাকায় যাওয়ার পর তিনি টের পান সঙ্গে থাকা সোনার বার দুটি আনেনি। সোনার বার দুটি তিনি কাস্টমসের স্ক্যানার মেশিনে দিয়েছিলেন।
দৌড়ে ছুটে গেলেন কাস্টমস জোনে। কিন্তু সোনার বার আর ফেরত পেলেন না। এরপর তিনি কাস্টম জোন থেকে আর্মড পুলিশের অফিসে আসেন অভিযোগ দেয়ার জন্য।
বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন, ১৩ দিন পর ওই প্রবাসীকে ফোন করে জানানো হয় তার সোনার বার দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর গতকাল সোমবার (৫ এপ্রিল) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে বার দুটি ফেরত নিয়ে যান তিনি।এ সময় মেহেদী বলেন, বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের কাছে কৃতজ্ঞ। তাদের আন্তরিকতার কারণে বার দুটি ফেরত পেলাম।
বার দুটি উদ্ধার প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন আরও বলেন, প্রবাসী মেহেদী হাসানের অভিযোগের পর আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ শুরু করি। তাতে দেখা যায় কাস্টমসের স্ক্যানার মেশিন থেকে ব্যাগ নিচ্ছেন যাত্রীরা। যাত্রীদের কয়েকজনের মধ্যেই একজন ট্রে-তে রাখা দুটি বার নিয়ে যান। কিন্তু কে সে যাত্রী? সেটি শনাক্ত করতে আমাদের সময়ও লাগে কিছুটা।
তিনি বলেন, বিমানবন্দরের বিভিন্ন সংস্থার সহায়তা একজন যাত্রীকে শনাক্ত করা হয়। যিনি একই দিনই দুবাই থেকে এসেছিলেন। ওই যাত্রী স্ক্যানার মেশিনে দুটি সোনার বার দেখতে পান, আর তা নিজের পকেটে নিয়ে নেন।বার নিয়ে যাওয়া যাত্রী কোন গাড়িতে গেলেন, তার পাসপোর্টসহ বিভিন্ন তথ্য আমরা সংগ্রহ করি। পরে জানতে পারিসেই যাত্রী বার দুটি নিয়ে ফেনীতে নিজের গ্রামের বাড়িতে গেছেন। এরপর সেই যাত্রীর কাছ থেকে বার দুটি উদ্ধার করে মেহেদী হাসানকে ফেরত দেয়া হয়।