শাহ সুমন, বানিয়াচং:হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে দরিদ্র ভূমিহীন কাউসার মিয়ার আশ্রয়ণ প্রকল্পের সরকারি ঘর দখল করে নিয়েছে তারই কোটিপতি ভাই-ভাবী। প্রচুর অর্থবিত্তের মালিক ও এলাকায় প্রভাবশালী মিজানুর রহমান সোহেল ও সাদিয়া সুলতানা সম্পর্কে ভূমিহীন কাওসারের আপন ভাই ও ভাবী।এঘটনায় এলাকায় চলছে গুঞ্জন। নীরবতা পালন করছে বানিয়াচং উপজেলা প্রশাসন!!
শুক্রবার(২৪ ফেব্রুয়ারী) দুপুর ১.টায় উপজেলার ৪নম্বর ইউনিয়নের ভট্রপাড়ায় সরেজমিন পরিদর্শনকালে প্রভাবশালী মিজানুর রহমান সোহেল এবং তার স্ত্রী সাদিয়া সুলতানা সরকারি ঘরটি জোরপূর্বক দখল করে বসবাস করার সত্যতা পাওয়া যায়।
স্থানীয়রা জানান,কাউসার মিয়া একজন অসহায় দিনমজুর। অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করে তার সংসার চলে।তার বাড়িঘর নেই।সে একজন প্রকৃত ভূমিহীন।স্ত্রী সন্তান নিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করেন।এজন্য বানিয়াচং উপজেলা প্রশাসন দরিদ্র কাউসার মিয়াকে ২০জুন ২০২১ সালে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় ২শতক ভূমিসহ একটি ঘর প্রদান করেন।কিন্তু তাতে লালসার নজর পড়ে তারই আপন প্রভাবশালী বড়ভাই মিজানুর রহমান এবং তার স্ত্রী সাদিয়া সুলতানার।জোরপূর্বক কাউসারের স্ত্রী সন্তানদের ঘর থেকে বের করে দেয় তারা।বর্তমানে ওই ঘরে কাউসারের প্রভাবশালী ভাই-ভাবী বসবাস করে আসছেন। কাউসার মিয়ার বড়ভাই মিজানুর রহমান সোহেল একটি গার্মেন্টসের উচ্চপদে দীর্ঘদিন যাবত চাকুরী করে আসছেন।লাখ টাকার উপরে তার মাসিক আয়।তার নিজস্ব মালিকানাধীন অনেক সম্পদ রয়েছে।নিজে কোটিদরিদ্র ছোট ভাইয়ের জায়গা দখল করা তার ঠিক হয়নি বলে দুঃখ প্রকাশ করেন এলাকাবাসী।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে দখলদার মিজানুর রহমান সোহেল এবং তার স্ত্রী সাদিয়া সুলতানা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন,তারা ওই ভূমিটি ২০১২ সালে একই এলাকার তারেক মিয়া নামের ব্যাক্তির কাছ থেকে ক্রয় সূত্রে মালিক হয়ে প্রায় ১২ বছরের অধিক সময় ধরে ওই ভূমিটি ব্যবহার করে আসছেন।এজন্য তারা আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর দখল করে রেখেছেন।পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন,এল আর উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হাজী আঃ মান্নান,সাবরেজিস্টার অফিসের দলিল লিখক মোক্তার হোসেন,সিরাজুল রহমান,জমি বিক্রেতা তারেক হোসেন প্রমূখ।
দরিদ্র কাউসার মিয়া বলেন,আমার জমিজামা নেই।অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার চালাই।সরকার আমাকে ২শতক জায়গাসহ একটি সুন্দর ঘর প্রদান করেছেন।সেই ঘরে কিছুদিন বসবাস করার পর,আমার ভাই-ভাবী আমার স্ত্রী সন্তানদের ঘর থেকে বের করে এখন নিজেরা বসবাস করছেন।আমি আমার ঘর ফিরে পেতে প্রশাসনের কাছে বিচার চাই।
এব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদ্মাসন সিংহ বলেন,বিষয়টি দুই ভাইয়ের মধ্যে। উভয়পক্ষকে ডেকে এনে দ্রুত বিষয়টির মিমাংসা করা হবে।