বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ বাগেরহাটে হঠাৎ করে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি চিকিৎসাসেবা নিতে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে দীর্ঘ লাইন মায়েদের। শুক্রবার সকালে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসারের কক্ষের সামনে, বিশেষ করে ১-৫ বছর বয়সী শিশুরা জ্বর-সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। জেলা হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে প্রতিদিন শিশু রোগীদের ভিড় বাড়ছে। বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে শয্যা সংকটের কারণে মেঝেতে বিছানা পেতে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা।
হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শতাধিক শিশু চিকিৎসা নিতে আসছে। চিকিৎসক ও নার্সরা রোগীদের ভিড় সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। তবে চিকিৎসকরা বলছে, ভয়ের কিছু নেই। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা পেলে শিশুরা সুস্থ হয়ে উঠবে।৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা শেখ রাজিয়া নাসের জেলা হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, মায়েরা তাঁদের আদরের সন্তানকে কোলে নিয়ে চিকিৎসকদের কক্ষের সামনে দীর্ঘ সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। শিশু ওয়ার্ডে শয্যা সংকটের কারণে হাসপাতালের বারান্দায়ও শয্যা পাতা হয়েছে। হাসপাতালে রোগীদের এত বেশি চাপ যেন তিল ধারণের ঠাঁই নাই।
জানা গেছে, দক্ষিণের উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে ১০ দিন ধরে শীতজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। শহর-বন্দর থেকে শুরু করে গ্রাম-গঞ্জে ঘরে ঘরে ঠাণ্ডাজনিত রোগে শিশু-বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছে। শিশুদের নিয়ে তাঁদের স্বজনরা জেলা হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ছুটছেন। বিশেষ করে শূন্য থেকে শুরু করে পাঁচ বছর বয়সী শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। প্রথমে তাদের সর্দি-কাশি দেখা দেয়। এরপর জ্বর, নিউমোনিয়া ও পাতলা পায়খানা হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শিশু ওয়ার্ডে ১৬টি শয্যা রয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন শয্যার চেয়ে গড়ে আড়াইগুণ বেশি শিশু ভর্তি হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রতিদিন স্বজনরা তাঁদের শিশুদের চিকিৎসা করাতে জেলা হাসপাতালে ভিড় করছেন।জেলা হাসপাতালে মেডিক্যাল অফিসারের কক্ষের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা দুই দিন বয়সী শিশু নওশাদের মা মিমি বেগম জানান, জন্মের পরের দিনই তাঁর ছেলের ঠাণ্ডা লেগেছে। এরপর থেকে ছেলের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। বুকের ভেতর শব্দ হচ্ছে এবং কান্নাকাটি করছে। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ছেলেকে কোলে নিয়ে চিকিৎসকের কক্ষের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন।বাগেরহাট ২৫০ শয্যা শেখ রাজিয়া নাসের জেলা হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. খান শিহান মাহমুদ জানান, ঠাণ্ডাজনিত কারণে প্রতিদিন গড়ে শতাধিক শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসছে। বেশির ভাগ শিশুর সর্দি-কাশি,নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া দেখা দিয়েছে।
বাগেরহাট ২৫০ শয্যা শেখ রাজিয়া নাসের জেলা হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. নিশাত তাসনিম জানান, বহির্বিভাগে শিশু রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে।হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার সমদ্দার জানান, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ১৬ শয্যা থাকলেও সেখানে প্রতিদিন গড়ে ৩৫-৩৮ জন শিশুকে ভর্তি রেখে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। শয্যা সংকটের কারণে মেঝেতেও বিছানা পেতে শিশুদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।