করোনাকালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বিশেষ বিমান পরিষেবা ‘এয়ার বাবল’ চুক্তির আওতায় আগামী শুক্রবার থেকে দেশটির সঙ্গে ফের ফ্লাইট চলাচলা শুরু হচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেয়া উপহারের ৩১টি অ্যাম্বুলেন্সের চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এমনটাই জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। মঙ্গলবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদের কাছে ভারতের উপহারগুলো হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, এয়ার বাবল ফ্লাইটে যাত্রীরা ঢাকা থেকে সরাসরি ফ্লাইটে তাদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌছাবেন। তৃতীয় কোনো বিমানবন্দরে তাদের ফ্লাইটটি বিরতি করবে না। অনুষ্ঠানে ভারতের কাছ থেকে টিকা পাওয়া না পাওয়ার বিষয়েও কথা বলেন মন্ত্রী মোমেন। তার ভাষ্যটি ছিল এমন ‘আমরা আশা করছি করোনা ভাইরাসের বাকি টিকা দেয়ার যে আশ্বাস ভারত দিয়েছে, সেটা তারা দ্রুতই পূরণ করবে। অনুষ্ঠানে টিকা প্রসঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, ভারতে অভ্যন্তরীণভাবে করোনা টিকার চাহিদা মিটে যাওয়ার পর আমরা ফের রপ্তানি শুরু করব।
আমরা বলিনি যে টিকা দেবো না। যত দ্রুত সম্ভব আমরা টিকা রপ্তানি শুরু করব এবং এতে বাংলাদেশ আমাদের অগ্রগণ্য অংশীদার।
বাংলাদেশের যে কোন জরুরি পরিস্থিতিতে সর্বপ্রথম প্রতিক্রিয়া দেখায় ভারত: বাংলাদেশের যে কোনও জরুরী পরিস্থিতিতে ভারত সর্বপ্রথমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এসেছে কারণ দেশটির সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্ব কৌশলগত সম্পর্কের ঊর্ধ্বে। জনস্বাস্থ্য বিষয়ক যে কোনও জরুরী পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণের নিজস্ব প্রচেষ্টায় যথাসাধ্য সমর্থন অব্যাহত রাখতে ভারত সদাপ্রস্তুত। এই সমর্থন হবে টেকসই, জনকেন্দ্রিক এবং বন্ধুদেশের সর্বোত্তম স্বার্থে। করোনাসহ শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত বাংলাদেশিদের জীবন রক্ষায় ৩১টি লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স এবং প্রায় ২০টন চিকিৎসা সামগ্রী হস্তান্তর বিষয়ে হাই কমিশনের তরফে এসব অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। বলা হয়, ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশি এবং বন্ধুরাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগনের জন্য এটি ভারত সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে উপহার।
২০২১ সালের মার্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঢাকা সফরকালে বাংলাদেশকে ১০৯ টি লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। প্রতিশ্রুত উপহারের প্রথম চালান এটি। বাকি অ্যাম্বুলেন্সগুলো শীঘ্রই পাঠানো হবে। অ্যাম্বুলেন্সগুলি চলমান কোভিড মহামারী মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের ব্যাপক প্রচেষ্টায় সহায়তা করার উদ্দেশ্যে প্রদান করা হয়েছে। এমনকি মহামারীর পরেও, অ্যাম্বুলেন্সগুলি জনস্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নয়নে বাংলাদেশের চলমান এবং দৃঢ় প্রচেষ্টায় সহায়ক হবে। এই উপহার বাংলাদেশের জনগণের সাথে অনন্য এবং বিশেষ বন্ধুত্বের প্রতি ভারতের অবিচল এবং দীর্ঘমেয়াদী অঙ্গীকারকে প্রতিফলিত করে।
হাই কমিশনের তথ্য মতে, ভারত প্রদত্ত ২০টন চিকিৎসা সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে- অক্সিজেন ন্যাজাল ক্যানুলা, অক্সিজেন ফেস মাস্ক, অক্সিজেন ফ্লো মিটার, নন-রিব্রিদার মাস্ক, পালস অক্সিমিটার ডিভাইস, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, ১০ লিটার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন তরল মেডিকেল অক্সিজেন সিলিন্ডার, ৪৫ লিটার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এলএমও সিলিন্ডার, অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর এবং ইনফ্রা থার্মোমিটার।