এনামুল হক রাশেদী, বাঁশখালী চট্টগ্রাম থেকে: সেবা, সংস্কার, উন্নয়ন বিষয়গুলো সচেতনতা ও সদিচ্ছার ব্যাপার। এসব বিষয়ে সরকার, নেতা বা অন্য কারো দিকে তাকিয়ে না থেকে কোন ব্যক্তি, গোস্টি বা প্রতিষ্ঠান যদি মনে করে থাকে এ কাজগুলি মানবিক, কল্যাণকর এবং সমাজ ও লোকালয়ের জন্য উপকারী তাহলে সেখানে আর কোন কথাই থাকেনা। ঠিক এমন একটি দৃষ্ঠান্তমুলক অনুকরনীয় অসাধ্য কাজ সাধন করল চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের সেবা ও উন্নয়নমুলক সামাজিক সংগঠন ‘কাহারঘোনা সংস্কার পরিষদ।’
দীর্ঘ ১৬ বছর জনপ্রতিনিধিরা বাঁশখালী থানাধীন ৭নং সরল ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড কাহারঘোনার প্রধান প্রধান সড়ক ও রাস্তা গুলোর মধ্যে মছন ফকির সড়ক(খলিলুর রহমানের পুকুর পাড় থেকে আনন্দ পাড়া ব্রিজ পর্যন্ত), জালিয়াখালী বাজার হতে লালখান পাড়া হয়ে খালাইস্সারো বাজার সড়ক, জামালের দোকান থেকে বড়ুয়ার টেক পর্যন্ত সড়ক। মূলত এই তিনটি প্রধান সড়কের সংস্কার কাজ না করার কারণে সড়ক গুলোর অবস্থা বেহাল, ও যানচলাচলের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়ছিল। সড়কের বেশিরভাগ জায়গায় এত বড়সড় গর্ত হয়ে মাটি ও বালি সরে গিয়ে ছোটখাটো খালে পরিণত হওয়ার কারণে নিয়মিত দূর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছিল। স্বৈরাচার সরকার আমলের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা রাস্তাগুলোকে ভাঙ্গা রেখে সংস্কারের বারবার ভূঁয়া বিল করার অভিযোগও আছে। কথিত আছে জনপ্রতিনিধিরা রহস্যজনক কারনে দীর্ঘ সময় ধরে রাস্তাগুলো ক্ষত বিক্ষত অবস্থায় রাখতেই উৎসাহী ছিল। এমতাবস্থায় ২০১৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী প্রতিষ্ঠিত ‘কাহারঘোনা সংস্কার পরিষদ’ এর নেতৃবৃন্দ শুভাকাংখীদের সহযোগিতা নিয়ে রাস্তাগুলোর সংস্কারের কাজ করে সাময়িকভাবে হলেও জন ও যান চলাচলের উপযোগী করার উদ্যোগ গ্রহন করে। উক্ত রাস্তাগুলোর সংস্কার করতে সরকারিভাবে কমপক্ষে পঁচিশ লক্ষ টাকার বাজেট লাগতো বলে মনে করেন স্থানীয় ঠিকাদাররা। কিন্তু ‘কাহারঘোনা সংস্কার পরিষদ’ এলাকাবাসীর সহযোগিতায় গত ১১ই অক্টোবর’২৪ ইং সংস্কার কাজের উদ্বোধন করে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ৭ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে ৩ টি সড়কের প্রায় শতকরা ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়। চলে। তহবিল শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে আরো ২০ শতাংশ কাজ বাকি রয়ে গেছে বলে জানায় সংস্কার পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ আবু ছিদ্দিক। এলাকাবাসীর মতে কাহারঘোনা সংস্কার পরিষদের এ উদ্যোগ একটি সাহসী উদ্যোগ ও বিরল দৃষ্ঠান্ত।
উদ্বোধনী দিনে সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে কাহারঘোনা সংস্কার পরিষদ নেতৃবৃন্দদের উৎসাহিত করেছেন প্রধান অতিথি বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও সমাজ সেবক স্মার্ট গ্রুপের অন্যতম শিল্প প্রতিষ্ঠান এ্যাপারেল প্রমোটার্স লিমিটেড এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আলহাজ্ব মাওলানা আমিন উল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন মাষ্টার নুর মোহাম্মদ চৌধুরী, মাওলানা হারুনর রশীদ, আহমেদ উল্লাহ কোম্পানি, উপদেষ্টা মাষ্টার জাহাঙ্গীর আলমসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
সংস্কার পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আবু ছিদ্দিক জানান, চলমান কাজের ২০ শতাংশ সহ কিছু কানেক্টিং রোড আছে যেগুলো কাজ করা প্রয়োজন। কিন্তু কাহারঘোনা সংস্কার পরিষদের তত ফান্ড না থাকায় তারা সেগুলো সরকারী সহযোগিতা বা বরাদ্ধ ছাড়া সংস্কার করতে পারছেনা। আবু ছিদ্দিক উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় মেম্বার ও সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতা কামনা করে আরো বলেন, লালখান পাড়া থেকে পশ্চিম পাশে সিকদার বাড়ি হয়ে আবদু সামাদ মাঝির বাড়ির পশ্চিম পাশ হয়ে মোশাররফ আলীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা, কাহারঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সডক, লকিয়ার বাপের বাড়ির পশ্চিম পাশ হয়ে রওশনিয়া মাদ্রাসা পর্যন্ত সড়ক, পূর্ব কাহারঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে সাতঘর পাড়া পর্যন্ত সড়ক, আনন্দ পাড়া হয়ে সাতঘর পাড়া ব্রিজ পর্যন্ত সড়ক এবং কাহারঘোনা নতুন পাড়া সড়কগুলো জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার জরুরী।
সভাপতি হারুনর রশিদ রাস্তা সংস্কারের কাজে যারা অর্থ ও স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে সহযোগিতা করেছেন সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আগামীতেও কাহারঘোনা সংস্কার পরিষদের সকল মানবকল্যাণ ও সমাজ উন্নয়নমুলক কাজে সাথে থাকার অনুরোধ জানান।
রাস্তা সংস্কার কাজ সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন, প্রধান সমন্বয়ক মুহাম্মদ আবু ছিদ্দিক, সভাপতি হারুনর রশীদ, সহ সভাপতি মাষ্টার জাহেদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হোসাইন, সহ সম্পাদক নজরুল ইসলাম খান, অর্থ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা সেলিম উদ্দিন, সহ অর্থ সম্পাদক আবুল কাসেম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাষ্টার জসিম উদ্দিন, সমাজ কল্যান সম্পাদক আলহাজ্ব আবদুল মঈন, অফিস সম্পাদক জমির উদ্দিন, সাহিত্য সম্পাদক মাষ্টার সরওয়ার আলম।