ফেনী শহরে পুলিশ-যুবক হাতাহাতির ঘটনায় পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) যশমন্ত মজুমদারসহ তিনজনকে ক্লোজড করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাইনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ওই যুবক মানসিকভাবে অসুস্থ। সে কারণে তিনি এ ধরনের আচরণ করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ আরও দায়িত্বশীল আচরণ করতে পারত। দায়িত্বশীল আচরণ না করায় ঘটনাস্থলে নিয়োজিত এসআই যশমন্ত মজুমদারকে শাস্তিমূলকভাবে ফেনী মডেল থানা থেকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে ফেনী শহরের মডেল স্কুলের সামনে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে এক রিকশারোহী যুবকের। পুলিশ তখন যুবকটির কলার ধরে পাকড়াও করে, যুবকটিও পুলিশকে আঘাত করে।
লকডাউন ভেঙে বের হওয়া এক রিকশাযাত্রীর সঙ্গে পুলিশ সদস্যদের হাতাহাতির এ ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। তিন মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একজন রিকশাযাত্রী হঠাৎ করেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন লকডাউনে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে। রিকশায় বসে থাকা এক যাত্রীর সঙ্গে কথা বলছেন একাধিক পুলিশ সদস্য। চলমান লকডাউনে মাস্ক পরা ও বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে চলাচল করতে বাধা দিচ্ছিলেন তারা। এ সময় ওই যাত্রীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় এবং তাকে রিকশা থেকে নামতে বলেন পুলিশ সদস্যরা।
একপর্যায়ে রিকশায় থাকা ওই ব্যক্তি উচ্চস্বরে দায়িত্বরত পুলিশদের উদ্দেশে বলে ওঠেন— ‘এই দেশে পুলিশের অনেক ক্ষমতা, না!’ এ সময় এক পুলিশ সদস্য তাকে জোর করে রিকশা থেকে নামাতে চাইলে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। রিকশা থেকে নামিয়ে ফেলা ওই ব্যক্তি বলতে থাকেন— তুই অন্য রিকশা ছাড়ছিস, আমারটা ধরলি ক্যান? একাধারে তিনি পুলিশদের গালাগালি করতে থাকেন।
ওই ব্যক্তি আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠলে পুলিশ সদস্যরা তাকে আঘাত করেন। এ সময় ওই ব্যক্তিও পুলিশদের পাল্টা আঘাত করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় একপর্যায়ে একাধিক পুলিশ সদস্য তাকে জাপটে ধরে এবং হ্যান্ডকাফ পরানোর চেষ্টা করেন। ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতার ভিড় জমতে শুরু করলে ওই ব্যক্তি সবার উদ্দেশে বলেন, মসজিদে কোরআন পড়তে যাচ্ছিলাম, বলছি আমাকে ছেড়ে দেন। এ সময় ওই হ্যান্ডকাফ পরতে অস্বীকৃতি জানান এবং গালাগালিসহ এলোপাতাড়ি হাত-পা ছুড়তে থাকেন। একই সময় তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশে চিৎকার করে ভিডিও করতে বলেন।
পরে একপর্যায়ে ৪-৫ জন পুলিশ সদস্য তাকে হ্যান্ডকাফ পরানোর জন্য জোরপূর্বক মাটিতে ফেলে চাপ প্রয়োগ করেন। তারা চিৎকার করে বলতে থাকেন, হ্যান্ডকাফ লাগা, ধর। এ সময় উপস্থিত জনতার তোপের মুখে তারা আবার ওই ব্যক্তিকে ধরে ওঠান এবং হ্যান্ডকাফ পরান।