রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইতোমধ্যে ইউক্রেনের যুদ্ধে হেরে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, কিয়েভের পাল্টা আক্রমণ মস্কোকে আলোচনার টেবিলে আনতে বাধ্য করবে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) হেলসিঙ্কিতে ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সাউলি নিনিসটোর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
রাশিয়া নতুন হামলা শুরু করেছে এবং প্রতিপক্ষকে ভয় দেখানোর জন্য প্রকাশ্যে এবং প্রায়শই পারমাণবিক হামলার হুমকি দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাইডেন বলেন, ‘পুতিনের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার কোনো বাস্তব সম্ভাবনা নেই।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জোর দিয়ে বলেন, ‘যুদ্ধ বছরের পর বছর ধরে টানা যাবে না।’
এই সপ্তাহে ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলনে কিয়েভকে সামরিক জোটটিতে অন্তর্ভুক্তির একটি টাইমলাইন দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে ন্যাটোর নতুন সদস্য ফিনল্যান্ড সফরকালে জো বাইডেন প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘ইউক্রেন একদিন এই জোটে যোগদান করবে।’
সংবাদ সম্মেলনে জো বাইডেন বলেন, ‘পুতিন ইতোমধ্যে যুদ্ধে হেরে গেছেন। পুতিনের একটি বাস্তব সমস্যা রয়েছে। ইউক্রেনের যুদ্ধে তার জয়ী হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’
ভিলনিয়াসে এই সপ্তাহের শীর্ষ সম্মেলনে ন্যাটো নেতারা ইউক্রেনের নেতা ভলোদিমির জেলেনস্কির সামরিক জোটে যোগদানের একটি সুস্পষ্ট টাইমলাইনের আশাকে ভেঙে দিয়েছেন। তারা বলেছেন, ‘শর্তগুলো পূরণ হলেই’ তারা ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ জানাবে।
বাইডেন অবশ্য বলেছেন, যুদ্ধ চলাকালে কোনো দেশ ন্যাটোর সদস্য হতে পারে না। ইউক্রেনের এখন যোগদানের অর্থ হবে ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে’ জড়ানো। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কিয়েভ একদিন এই ক্লাবে যোগ দেবে।
বাইডেন বলেন, ‘তাদের (ইউক্রেনের) যোগদান করা উচিত নাকি অনুচিত তা নিয়ে নয়, বরং তারা কখন যোগদান করতে পারবে সেটাই হলো কথা।’
পুতিন গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ইউক্রেনকে যদি ন্যাটোতে সদস্যভুক্ত করা হয়, তাহলে এটি ‘সাধারণভাবে বিশ্বকে আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলবে’ এবং বিশ্বব্যাপী উত্তেজনা বাড়াবে।
মস্কো ইউক্রেনের ওপর আরেকটি বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে চারজন আহত হয়েছে। কিয়েভ বলেছে, তারা ২০টি রাশিয়ান আক্রমণকারী ড্রোন এবং দুটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে।
এদিকে ইউক্রেনের ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুত বিতর্কিত ক্লাস্টার যুদ্ধাস্ত্র পেয়েছেন।
ইউক্রেনের সেনা কমান্ডার ওলেক্সান্ডার টারনাভস্কি মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেন, ‘আমরা এগুলো পেয়েছি। আমরা এখনও সেগুলো ব্যবহার করিনি। তবে এগুলো (যুদ্ধক্ষেত্রে) পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন করতে পারে।’
কিয়েভের জন্য পশ্চিমা সমর্থনের জবাবে মস্কো ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছে, এটিকে তারা ইউক্রেনে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পাঠানোর ‘পারমাণবিক’ হুমকি হিসেবে বিবেচনা করবে। কারণ, এই যুদ্ধবিমানের পারমাণবিক বোমা বহন করার ক্ষমতা রয়েছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভকে উদ্ধৃত করে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘রাশিয়া এই বিমানের পারমাণবিক অস্ত্র বহনের ক্ষমতাকে উপেক্ষা করতে পারে না। এখানে কোনো ধরনের নিশ্চয়তা কাজ করবে না।’