তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় একটি কোমল পানীয়র বোতল না বলে নেওয়ার অপরাধে মানসিক প্রতিবন্ধীসহ দুই কিশোরকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বিকালে কুলাউড়া উপজেলার রাজনগর গ্রামের খলিল মিয়ার ছেলে খালিদ হাসান রুমেল ও রাতে নন্দীরগ্রাম গ্রামের রিশিকেশ পালের ছেলে পাপ্পু পালকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুস ছালেক।
মামলা ও পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, বুধবার বিকালে কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নের রইছ আলীর ছেলে মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোর রুবেল মিয়া রবিরবাজারের বেঙ্গল ফুড দোকানের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় বেঙ্গল ফুডের পরিবেশক খালিদ হাসান রুমেল তাকে দিয়ে মালবাহী গাড়ি থেকে পণ্য নামানোর কাজ করান। এ সময় প্রতিবন্ধী ওই কিশোর কোমল পানীয়র একটি বোতল হাতে নেন। বিষয়টি দেখে খালিদ হাসান রুমেল তার দোকানের কয়েকজন কর্মচারীসহ প্রতিবন্ধী কিশোর রুবেল মিয়াকে আটক করে। এ সময় তার চাচাতো ভাই একই গ্রামের রকিব আলীর ছেলে জিবান আহমদ ভাইকে রক্ষায় এগিয়ে এলে তাকেও আটক করে। পরে বেঙ্গল ফুডের দ্বিতীয় তলায় একটি জিম সেন্টারে নিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করা হয়।
নির্যাতনের পর চুরির অভিযোগ তুলে তাদের রবিরবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির কার্যালয়ে নিয়ে অভিভাবকদের খবর দিয়ে আনা হয়। পরে সমিতির নেতারা সাদা কাগজে দুই কিশোরের অভিভাবকদের স্বাক্ষর নিয়ে তাদের ছেড়ে দেন। রাতেই আহত দুই কিশোরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করানো হয়।
পরদিন সকালে মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোর রুবেল মিয়ার বড় ভাই রাসেল মিয়া বাদী হয়ে কুলাউড়া থানায় মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ রবিরবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামি খালিদ হাসান রুমেল এবং রাতে অপর আসামি পাপ্পু পালকে গ্রেপ্তার করে।
কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার সিয়াম রাফি বলেন, ’বুধবার রাতে আহত দুই কিশোরকে চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। দু’জনের মধ্যে প্রতিবন্ধী কিশোরের বুকে ও পিঠে মারাত্মক জখম রয়েছে।’
কুলাউড়া থানার ওসি বলেন, ’মামলা দায়েরের পরপরই পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি রুমেলকে ও পরে আসামি পাপ্পুকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’