ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সূর্যসেন হলে পাওনা টাকা চাওয়ায় হলের ক্যান্টিন মালিকের দাড়ি ছিঁড়ে দেওয়া অভিযুক্ত নেতাকে ছাত্রলীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক মো. তানভীর হাসান সৈকত স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম আরাফাত হোসাইন অভি। তিনি সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তিনি হলের ২৬৯ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী। আরাফাত হোসাইন অভি ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সোমবার দুপুরে ঢাবির সূর্যসেন হলের ক্যান্টিনে পাওনা টাকা চাওয়ায় ক্যান্টিন মালিককে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন আরাফাত হোসাইন অভি। একপর্যায়ে ক্যান্টিনের মালিকের দাড়ি টেনে ছিঁড়ে ফেলেন। পরে হলের শিক্ষার্থীরা ও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ছিঁড়ে ফেলা দাড়ি হাতে নিয়ে হল প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে যান হলের ক্যান্টিন মালিক।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী হল ক্যান্টিন মালিক ফাহিম হোসেন হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেবেন বলে জানান।
ভুক্তভোগী ফাহিম হোসেন বলেন, ‘অভি ভাই গত পরশু ক্যান্টিন থেকে খাবার নিয়ে যায়। তখন আমি তাকে আগের পাওনা টাকা দেওয়ার বিষয়ে বলি। তখন সে কিছু না বলে খাবার নিয়ে যায়। পরে গতকাল সে আর আসেনি। আজকে (সোমবার) যখন আবার দুপুরে খাবার নিতে আসে তখন আমি তাকে পাওনা টাকার ব্যাপারে বলি। পরে সে আজকের খাবারের টাকাও বাকি খাতায় লিখে রাখতে বললে আমি পুনরায় টাকা চাইলে এই ঘটনাটি ঘটে।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আরাফাত হোসাইনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি দুপুরে খাবার খেতে গেলে ক্যান্টিন মালিক বকেয়ার টাকা চায়। তখন আমি বলি আমার বিকাশে সমস্যা হয়েছে, টাকা তুলতে পারছি না। আমি প্রমাণও দেখিয়েছিলাম। পরে সেখান থেকে বের হওয়ার সময় তিনি ম্যানেজারকে বললেন, আমাকে যেন নেক্সট টাইম খাবার না দেওয়া হয়। এ কথা শুনে আমি ক্যান্টিন মালিককে বলি আপনি এটা কেমন কথা বললেন, সমস্যা তো থাকতে পারে! এরপর হঠাৎ করে তিনি আমাকে ধাক্কা মারেন, আমিও তার কলার টেনে ধরি। ধাক্কাধাক্কির মধ্যে তার দাড়িতে আমার হাত লেগে ছিঁড়ে যায়। তিনি আমাকে প্রথমে ধাক্কা দেন। আমি কোনো মারধর করিনি।’
জানতে চাইলে সূর্যসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি ক্যান্টিন মালিককে ঘটনা নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। আমাদের তিনজন হাউস টিউটর ও ক্যান্টিন পরিচালনার সাথে যুক্ত আরেকজনসহ চারজনের একটি তদন্ত কমিটি করে দিচ্ছি। তারা তিন দিনের ভেতর রিপোর্ট জমা দেবে। আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। বর্তমানে হলের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’