নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে পর্নোগ্রাফি ভিডিও তৈরি করতে রাজি না হওয়ায় স্ত্রীকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের দেওয়ার অভিযোগে স্বামী মোরসালিনকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রোববার (১ আগস্ট) দুপুরে সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতিকুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত মোরসালিন উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের পঞ্চবটি গ্রামের ফজর আলীর ছেলে।
জানা যায়, সোনারগাঁও পৌরসভার ফতেকান্দী গ্রামের জাকির হোসেনের মেয়ে আমেনা আক্তারকে এক বছর আগে সোনারগাঁও জি.আর. ইনস্টিটিউশন মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে থেকে কয়েকজন সঙ্গী মিলে অপহরণ করে জোরপূর্বক বিয়ে করে বৈদ্যের বাজার ইউনিয়নের পঞ্চবটি গ্রামের ফজর আলীর ছেলে মোরসালিন। বিয়ের একমাস পর থেকে তার স্বামী স্ত্রী আমেনাকে দেহ ব্যবসা ও পর্নোগ্রাফি ভিডিও করতে চাপ সৃষ্টি করে। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে দেড় লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। যৌতুক দিতে রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করে। স্বামীর নির্যাতনে আমেনার দুই কান দিয়ে রক্তক্ষরণসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।
গত শুক্রবার সকালে পুনরায় শারীরিক নির্যাতন করে। ওইদিন দুপুরে সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দায়ের করেন আমেনা। অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোনারগাঁও থানা পুলিশ মোরসালিনকে রোববার সকালে আটক করে নিয়ে আসে। পরে দুপুরে সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে আমেনা আক্তার ও মোরসালিনকে মুখোমুখি করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ আমেনা আক্তার জানান, তার স্বামী মাদক সেবন ও বিক্রির সাথে জড়িত। তার অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। আমি সন্তান ধারণ করলে আমার স্বামী ও শাশুড়ি জোরপূর্বক গর্ভপাত করায়। গত ৮ জুলাই সে ভাড়া বাড়িতে আমাকে তার বন্ধুদের সাথে অনৈতিক কাজ করতে বলে। এতে রাজি না হওয়ায় আমাকে এলোপাথাড়ি মারধর করে। বর্তমানে আমি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতিকুল ইসলাম জানান, পর্নোগ্রাফি ভিডিও তৈরি করতে রাজি না হওয়ায় স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগে স্বামীকে এক বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। স্বামী স্ত্রীকে মুখোমুখি করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।