মানিকগঞ্জ-২ আসনে নৌকায় ভোট না দিলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের ‘গুলি করে হত্যা’র হুমকি দেওয়া সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলী ইস্কান্দারের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বুধবার রাতে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার তালেবপুর ইউনিয়নের ইরতা গ্রামে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহম্মেদের কর্মী শাহিনুর ইসলাম, আবদুর রাজ্জাক, মো. মিনহাজ স্বতন্ত্র প্রার্থীর ট্রাক প্রতীকে ভোট চেয়ে ছোট পোস্টার (হ্যান্ডবিল) বিতরণ করছিলেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত হন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা আলী ইস্কান্দার। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের হাত কেটে নেওয়াসহ নানা হুমকি-ধামকি দেন। তার ওই হুমকির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা যায়, আলী ইস্কান্দার উচ্চস্বরে বলছেন, ‘এবার আমার দেখার আছে। আমি তো কেন্দ্রের ভেতরে থাকবো। নৌকা প্রতীকে ভোট না দিলে হাত কাইটা (কেটে) ফালামু (ফেলবো)। রেডি (প্রস্তুত) থাইকো। সাহস থাকে পাল্লা লইবা আমার লগে। কে আছে আমার বিরুদ্ধে যাবে। লজ্জা করে না তোমাদের। দেখার আছে আমার। খোদার কসম, দেখার আছে এইবার। চৌদ্দ শিকে ঢুকাইয়া ছাইরা দিমু। সরকার আমার, পাওয়ার আমার, প্রশাসন আমার, এমপি আমার। যাইও ভোট দিবার যাইও ট্রাক মার্কায়। ট্রাকের চাকার তলে ফালাই দিমু। ফাজলামো। হাড্ডি মাংস এক কইরা ফালামু। প্রত্যেকটাকে গুলি করবো।’
মামলার এজাহারে নির্বাচন কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম উল্লেখ করেন, আসামির এ ধরণের বক্তব্যের ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন গণমাধ্যমেও তা প্রকাশ হয়। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ও ভীতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়।
মামলার বিষয়ে সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) মানবেন্দ্র বালো বলেন, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হরিরামপুর উপজেলার স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদ আহম্মেদের এক কর্মীকে হুমকি-ধামকি দেওয়ার ঘটনায় ভূক্তভোগী স্বতন্ত্র প্রার্থী কর্মী শাখাওয়াত হোসেন বাদী হয়ে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরিদ মোল্লাসহ অজ্ঞাত আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হরিরামপুরের কৌড়ি এলাকায় একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদ আহম্মেদের কর্মী শাখাওয়াত হোসেন। এ সময় তার হাতে নৌকা প্রতীকের লিফলেট দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় যেতে বলেন যুবলীগের নেতা ফরিদ মোল্লা। এতে রাজি না হওয়ায় তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
এ ব্যাপারে যুবলীগের নেতা ফরিদ মোল্লা বলেন, ‘শাখাওয়াত বিএনপির কর্মী। বিএনপির ভোট বর্জনের লিফলেট বিতরণ করছিলেন। এ কারণে তার সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। যে অভিযোগে মামলা করেছেন, তা মিথ্যা।’
উৎস: সমকাল