
অসামাজিক কাজের অপবাদ দিয়ে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেছে একদল ব্যক্তি, যারা একটি স্থানীয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য বলে জানা গেছে।
ঘটনাটি গত ২ সেপ্টেম্বরের হলেও তা এক মাস পর রবিবার ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। অভিযোগ উঠেছে, ভিডিওতে যারা ওই নারীকে নির্যাতন করছে তারা স্থানীয় দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার ও আর সাঙ্গপাঙ্গরা।
এ ঘটনায় রবিবার দেলোয়ার বাহিনীর কথিত সেকেন্ড ইন কমান্ড আব্দুর রহিমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ভাইরাল সেই ভিডিওটি রবিবার সন্ধ্যায় ঢাকা টাইমসের হাতে এসেছে। এতে দেখা গেছে, একদল যুবক ওই নারীকে পেটাতে পেটাতে বিবস্ত্র করে ফেলেছে। নিজের আব্রু রক্ষা করতে চেষ্টার পাশাপাশি নারী বারংবার তাদের বাবা ডেকে তাকে নির্যাতন না করার আকুতি জানান।
বেগমগঞ্জের একলাশপুর ইউনিয়নে এই ঘটনায় নারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে, গোপনে সাবেক স্বামী তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। এরপরই একদল যুবক অনৈতিক কাজের অপবাদ দিয়ে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে।
এদিকে নারীকে নির্যাতনের ভিডিওটি ভাইরাল হলে জেলায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ এক যুবককে আটক করে।
অন্যদিকে নির্যাতনের শিকার সেই নারী ও তার পরিবার সন্ত্রাসীদের ভয়ে বাড়িতে তালা দিয়ে চলে গেছেন। এ বিষয়ে তার প্রতিবেশীদেরও কোনও বক্তব্য জানতে পারেনি এ প্রতিবেদক।
স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, তিন বছর আগে ওই নারীর বিয়ে হলেও স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের কারণে তিনি বাবার বাড়িতে থাকতেন। গত ২ অক্টোবর রাতে ওই নারীর আগের স্বামী তার সঙ্গে দেখা করতে আসেন।
এসময় স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার এ ঘটনা দেখে রাত ১০টার দিকে তার লোকজন নিয়ে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করে পর পুরুষের সাথে অনৈতিক কাজ করেছে বলে অভিযোগ এনে তাকে মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে পিটিয়ে নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করেন।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও দেখে পুলিশ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে আব্দুর রহিম নামের নির্যাতনকারী দলের এক সদস্যকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আবদুর রহিম ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
নোয়াখালী পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে একজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকের চেষ্টা চলছে। এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা যতই ক্ষমতাধর হোক না কেন তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হবে।