তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকি হাওর। হাকালুকি হাওর বেষ্টিত ছোটবড় পাহাড়ি ছড়া ও নদী দিয়ে নামা পাহাড়ি ঢলের পানি হাকালুকিতে নামতে শুরু করেছে। হুমকির মুখে হাওর পাড়ের ২০ সহস্রাধিক হেক্টরের বোরো ধান। ফলে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় হাওড়পাড়ের কৃষকরা।
হাকালুকি হাওড় তীরের কৃষকরা জানান, গত ২২ মার্চ থেকে হাকালুকি হাওড়পাড়ে মৌসুমি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। বৃষ্টির সঙ্গে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে হাওড়ে বোরো ধানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তারপরও তারা এক বুক আশা নিয়ে বেঁধেছিলেন ছোট খাটো ক্ষতির উপেক্ষা। কিন্তু ক্রমে সে আশা উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় রূপ নিয়েছে। থেমে থেমে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় হুমকির মুখে এখন বোরো ধান। পাহাড় থেকে নেমে হাকালুকি হাওড়ে মিলিত হওয়া গোগালিছড়া, ফানাই নদী, জুড়ী নদী ও সুনাই নদী দিয়ে পাহাড়ি ঢল নামছে।
হাকালুকি হাওড় তীরের মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা উপজেলার ৮০ ভাগ বোরো ধান হাকালুকিকেন্দ্রিক। এছাড়া সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার ২৫ ভাগ বোরো ধান হাকালুকি হাওড়ে উৎপাদন হয়।
কুলাউড়া উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় আট হাজার ৩৮৩ হেক্টর। কিন্তু কৃষকরা আবাদ করেন আট হাজার ৫৯০ হেক্টর। জুড়ী উপজেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫হাজার ৫৮৫ হেক্টর। কৃষকরা বোরো আবাদ করেন পাঁচ হাজার ৯২৫ হেক্টর। এছাড়া বড়লেখা উপজেলায় এবার বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫ হাজার ৩৭৩ হেক্টর। কৃষকরা আবাদ করেছেন সমপরিমাণ জমি।
হাকালুকি হাওড় তীরের ৫টি উপজেলা মিলিয়ে বোরো আবাদের পরিমাণ ২০ সহস্রাধিক হেক্টর হবে বলে কৃষি অফিসগুলোর দাবি। মাছের পরেই হাকালুকি হাওড়ের বোরো ধান হাওড় তীরের মানুষের জীবিকায়নের অন্যতম উৎস।
হাকালুকি হাওড় তীরের কুলাউড়া উপজেলা কৃষি অফিসার জসিম উদ্দিন ও বড়লেখা উপজেলা কৃষি অফিসার মনোয়ার হোসাইন জানান, বুধবার পর্যন্ত ঝড় ও বৃষ্টিপাত হয়েছে। এখনো যদি বৃষ্টিপাত থেমে যায় তাহলে পাহাড়ি নদ নদী ও ছড়া দিয়ে যে পরিমাণ ঢল নামছে তাতে বোরো ধানের খুব একটা ক্ষতি হবে না। আরও বৃষ্টি হলে ক্ষতির আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এখানে পাহাড়ি ঢল নামে হাকালুকি হাওড়ে। তাই ঢল নামলেই বোরো ধানের ক্ষতির আশঙ্কা থেকে যায়।