ধু-ধু মরুভূমির মাঝে বিস্ময়কর ‘লাভ লেক’
বিশাল মরুভূমির মাঝে হৃদয় আকৃতির দুইটি হ্রদে টলটল করছে পানি-বিস্ময়কর এক দৃশ্য! চারপাশে সবুজ গাছপালায় ঘেরায় আর মাঝে লাভ শেপের লেক। লেকের পাশেই গাছের সারি দিয়ে লেখা আছে ‘লাভ লেক’। বিস্ময়কর এই লেকের অবস্থান দুবাইয়ে।
দুবাইয়ে দর্শনীয় স্থানের অভাব নেই। প্রতি বছর বিশ্ববাসীকে অবাক করে দিয়ে তৈরি হয় দর্শনীয় বিভিন্ন স্পট। বিশ্বের দীর্ঘতম টাওয়ার এবং শপিং মল ছাড়াও সেখানে আছে প্রাকৃতিক বিভিন্ন আকর্ষণ। তেমনই একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থান হলো লাভ লেক।
দুবাইয়ের রাজকুমার শেখ হামদান বিন মোহাম্মদ তার ইনস্টাগ্রামে কৃত্রিম হ্রদের একটি ছবি শেয়ার করার পর থেকেই বিশ্ব চিনেছে স্থানটিকে। প্রতি মাসেই দর্শকদের সংখ্যা বাড়ছে লাভ লেকে। ধু-ধু মরুভুমির সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে হৃদয়াকৃতির দু’টি হৃদ।
স্থানটির নাম আল কুদ্রা। দুবাইয়ের আল কুদ্রা মরূদ্যানে অবস্থিত লাভ লেকটি। ৫ লাখ ৫০ হাজার বর্গমিটার এলাকা জুড়ে দুটি কৃত্রিম লেক তৈরি করা হয়েছে সেখানে। বিশ্বের অন্যতম এক রোমান্টিক স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়েছে লাভ লেক।
স্থানটি পার্ক হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে। এর প্রবেশদ্বারে বিশালাকার একটি কাঠ খোদাই করে লেখা আছে লাভ লেক। গাছের ফাঁকে, পাথর এবং দেয়াল এবং এমনকি পানিতে পর্যন্ত প্রেমের প্রতীত আছে সেখানে। লাভ লেকের চারপাশে প্রায় ১৬ হাজারেরও বেশি গাছ আছে।
লাভ লেক বারবিকিউ স্পট বা সন্ধ্যায় ঘুরতে যাওয়ার সেরা স্থান হিসেবে জনপ্রিয়। দুবাইয়ের উদ্ভাবনী আকর্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম এটি। শহর থেকে অনেক দূরে হওয়ায় স্থানটি শান্ত ও নির্মল। প্রিয়জনের সঙ্গে রোমান্টিক সময় কাটানোর সেরা স্থানগুলোর মধ্যে লাভ লেক অন্যতম।
এখান থেকে দুবাইয়ের সবচেয়ে সুন্দর সূর্যাস্তের সাক্ষী হতে পারবেন। সূর্যাস্তের সময় মরুভূমির বালুগুলো সোনার ন্যায় রং ধারণ করে। লাভ লেকের পানির রং হয় নীলচে সবুজ। সেইসঙ্গে চারপাশের শান্ত পরিবেশ, পাখির ডাক ও বাতাসে গাছপালার মৃদু শব্দে মুহূর্তেই আপনি স্বর্গসুখ অনুভব করবেন।
১৭৫ প্রজাতির পাখির বসবাস এই মরু উদ্যানের পার্কে। লাভ লেকের পানিতে পা ভেজাতেও পারবেন আপনি। লেকের এক অংশে গোল্ড ফিশের বসবাস। লাভ লেক পার্কে আছে অসংখ্য সেলফি স্পট। এগুলো সবই হৃদয় আকৃতির।
লাভ লেকের পাশে দাঁড়ালে আপনার মনে হবে এটি কেবল একটি বাঁকা লেক। এই জোড়া হৃদের আসল সৌন্দর্য দেখা যায় মাটি থেকে কমপক্ষে ৫০ মিটার উপরে গেলে। সুতরাং আপনার একমাত্র বিকল্প হলো একটি ড্রোন ওড়ানো বা হেলিকপ্টারে উঠে সৌন্দর্য উপভোগ করা।
লাভ লেকের কাছে কোনো দোকান বা রেস্তোঁরা নেই। সুতরাং আপনি যখন যাবেন; তখন সঙ্গে খাবার এবং পানি নিতে ভুলবেন না। এমনকি সেখানে বাতিও নেই। লাভ লেকে যাওয়ার আগে যেসব বিষয়গুলো জানা জরুরি-
>> পার্কে প্রবেশ করতে কোনো অর্থ লাগবে না, সম্পূর্ণ ফ্রি।
>> আপনি যদি পার্কে ড্রোন উড়াতে চান; তাহলে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।
>> পার্কে মাছ ও পাখিদের খাওয়ানো যাবে না।
>> শীতকালে মরুভূমি অনেক বেশি শীতল। তাই উপযুক্ত পোশাক পরতে হবে।
>> পার্কের কিছু অংশে হাঁটাহাঁটি করার জন্য হাই হিল পরার অনুমতি নেই।
>> লাভ লেকের নিকটতম রেস্তোঁরাটি হ্রদ থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে।
>> এর আশেপাশে দর্শনীয় স্থানসমূহের মধ্যে আছে-বিভিন্ন খামার, মরুভূমির সংরক্ষতি স্থান এবং ঘোড়ার আস্তাবল।