লাবিব হাসান, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কুয়াকাটাসহ কলাপাড়া সমুদ্র উপকুলীয় এলাকার ৩৩০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রন বেড়িবাঁধ ঝুকিপূর্ন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এরমধ্যে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সময় ৭ দশমিক ৭ কিলোমিটার বাধঁ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত । এসব ভাঙ্গা ও ঝুকিঁপুর্ন বেরিবাধঁ দিয়ে জলোচ্ছাস, অমাবশ্যা পুর্ণিমার জোয়ারের সময় সমুদ্রের পানি প্রবেশ করে বাড়িঘর ও কৃষি জমি তলিয়ে যায়। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে কৃষকরা। ফলে ঝড় জলোচ্ছ্বাসের সময় সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকার মানুষ সব সময় আতংকের মধ্যে দিনযাপন করে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়া অফিসের তথ্যমতে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সময় ৪৭/১ নম্বর পোল্ডারের নিজামপুর পয়েন্টে ১ দশমিক ৫০ কিলোমিটার, ৫৪/এ নম্বর পোল্ডারের দেবপুর পয়েন্টে ১ দশমিক ৫০ কিলোমিটার, ৫৪/এ নম্বর পোল্ডারের গন্ডামারি পয়েন্টে দশমিক ৩০ কিলোমিটার, ৪৭/৪ নম্বর পোল্ডারের ধূলাসার পয়েন্টে ০.দশমিক ৩৩৫ কিলোমিটার, ৪৭/৫ নম্বর পোল্ডারের পশরবুনিয়া পয়েন্টে ০. ১১ কিলোমিটার জোয়ারের পানির তোড়ে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এর মধ্যে ৪৭/১ নম্বর পোল্ডারের নিজামপুর পয়েন্টে ১ দশমিক ৫০ কিলোমিটার ও ৪৭/৪ নম্বর পোল্ডারের ধূলাসার পয়েন্টে ০.৩৩৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ জরুরী সংস্কারের কাজ চলছে। বাকি বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এর মধে লালুয়া ইউনিয়নের প্রায় ৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সিডরের সময় বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত সংস্কার করা হয়নি। লালুয়া ইউনিয়নের মানুষ ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সময় পানি বন্দি হয়ে থাকে। বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রতিদিন দু”বার জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় ওই এলাকা। এসময় লালুয়া ইউনিয়নের মোট ২৬টি গ্রামের ২৩টি গ্রামই থাকে পানির নিচে। অমাবশ্যা কিংবা পূর্ণিমার জো’তে অতিরিক্ত পানি প্রবেশ করে। এতে ভোগান্তিতে পরে মানুষজন। প্রতিদিন দু’বার জোয়ারের পানি ওঠা-নামা করায় এলাকার মাটির রাস্তাগুলো নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
লালুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. শওকত হোসেন জানান, এ ইউনিয়নে পাকা সড়ক আছে পাঁচ কিলোমিটার এবং কাঁচা সড়ক আছে ২০ কিলোমিটার। ইউনিয়নের প্রায় সাত কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সিডরের সময় বিধ্বস্ত হয়। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে প্রায় এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়। বর্তমানে আট কিলোমিটার বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে দিনে দুইবার জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। জোয়ার-ভাটার কারনে লালুয়ার ২০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক অনেকটা মাটির সাথে মিশে গেছে। অরক্ষিত বেড়িবাঁধের কারনে ইউনিয়নের মানুষ সাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টির খবর পেলেই আতঙ্কিত হয়ে পরে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়া সার্কেলের উপ-বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.হালিম সালেহী সাংবাদিকদের বলেন, অক্ষত বেড়িবাঁধগুলোর মধ্যে ৪৭/১ নম্বর পোল্ডারের নিজামপুর পয়েন্টে ১ দশমিক ৫০ কিলোমিটার, ৪৭/৪ নম্বর পোল্ডারের ধূলাসার পয়েন্টে ০ দশমিক ৩৩৫ কিলোমিটার ও কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে জরুরী ভিক্তিতে সংস্কার কাজ চলছে। বাকি অক্ষত বেড়িবাঁধ পূনঃসংস্কার প্রকল্প প্রণয়ন চলছে। যা আগামী দু’মাসের মধ্যে মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হবে। এছাড়া কুয়াকাটায় স্থায়ী বীচ রক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পে সাড়ে সাতশত কোটি টাকা চেয়ে মন্ত্রনালয়ে প্রস্তাবকনা পাঠানো হয়েছে।