বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি কৃষকসহ জনগণের জীবন দুর্বিষহ করে তুলবে। আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কমতে শুরু করেছে, তখন আমাদের দেশে তেলের দাম বাড়িছে সরকার। নিজেদের লুটপাট, চুরি ও দুর্নীতির টাকাকে হালাল করতে এসব করে জনগণের পকেট কাটা হচ্ছে।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আজ রোববার দুপুরে কৃষক দলের বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, বন্দুক বাহিনী দিয়ে দেশ চালানো যাবে না মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ‘এ দেশের মানুষ আর এভাবে দেশ চালাতে দেবে না। কারণ, এরা (আওয়ামী লীগ) আমাদের রাজনীতি, অর্থনীতি ও ভবিষ্যতকে ধ্বংস করেছে। তাই, এ সরকারকে আর টিকতে দেওয়া যায় না।’
সমাবেশে ফখরুল বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম মধ্যরাতে এক লাফে বাড়ানো হয়েছে। ৪০ শতাংশ, ৫০ শতাংশ দাম বাড়িয়ে সর্বনাশ করা হয়েছে। সর্বক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়বে। অর্থনীতি আরও খারাপের দিকে যাবে।’
জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে কৃষক সমাজ এখন চোখে অন্ধকার দেখছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন,‘সেচের চিন্তায় যখন কৃষক সমাজ উদ্বিগ্ন, তখন এ সরকারের কিছু যায় আসে না। কারণ, তাদের জনগণের প্রয়োজন নেই। তার আছে পুলিশ বাহিনী, র্যাব-বিজিবি বাহিনী, বন্দুক বাহিনী, সেনাবাহিনী নিয়ে। এ বাহিনী দিয়ে সে দেশ চালাবে। আর হবে না, এ দেশের মানুষ আর এভাবে দেশ চালাতে দেবে না।’
জনগণকে আওয়ামী লীগের দেওয়া তথ্য বিভ্রান্তিতে না ফেলার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গরিবকে গরিব বানিয়েছে ধনীকে আরও ধনী বানিয়েছে। সঠিক তথ্য তারা দেয় না। জনগণকে বিভ্রান্ত করতেই তাদের এ মিথ্যা তথ্য। তথ্যযাত্রায় নিজেকে প্রশ্ন করুন, তাহলেই দেখতে পাবেন—কীভাবে তেলের মূল্য দ্রব্যমূল্যের মূল্যসহ সবকিছু বৃদ্ধি করা হয়েছে।’
ভোলা জেলায় ছাত্রদলের সভাপতি নুরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুর রহিম হত্যা ও জ্বালানি তেল, সারের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রতিবাদে কৃষক দল বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। নূর ও আব্দুর রহমানের মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা শুনেছি, আপনি নাকি ওসি (তদন্ত) আরমান। কী অবস্থা ঘটেছিল যে তাকে ( আলম-আব্দুর রহিম) গুলি করলেন? আব্দুর রহিম সঙ্গে সঙ্গে মারা গেছেন, আর ছাত্রনেতা নু্রে আলমের মাথায় ১৬টি স্প্লিন্টার নিয়ে তিন দিন পর মারা গেছেন। আরও ১৯ জন এখনও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা সবাই সংঘবদ্ধ হচ্ছি, ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি। সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে বলছি—আসুন আমরা সবাই ছোটখাটো ভুলগুলো অবসান ঘটিয়ে ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যবদ্ধ হয়ে ১৯৭১ সালে আমাদের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র-সাম্য প্রতিষ্ঠা করা, সে লক্ষ্যে অগ্রসর হই।’
কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এখন পর্যন্ত বক্তব্য দিয়েছেন আব্দুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, আমান উল্লাহ আমান, রুহুল কবির রিজভী, ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ। সঞ্চালনা করছেন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল।