বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ আজ (রবিবার) ৩০ এপ্রিল জান্নাতীর দাখিল পরীক্ষা শুরু। শনিবার বিকেলে শেষ হয়েছে পিতার দাফন। রাতটুকু পার করেই বসতে হয়েছে পরীক্ষার কেন্দ্রে। জান্নাতী কি পারবে পরীক্ষার এ বৈতরনী পার করতে। এরকম হাজারো বাঁধা বিপত্তি উপেক্ষা করে জান্নাতী অংশ গ্রহন করেছে আজ থেকে শুরু হওয়া দাখিল পরীক্ষায়। গত ২৮ এপ্রিল চাচাতো ভাই হোসাইন শেখের লাঠির আঘাতে নিহত পিতার শোক নিয়ে পরীক্ষার হলে বসতে হয়েছে তাকে।
চিতলমারী আলিয়া মাদ্রাসা সুপার মোঃ ইদ্রিসুর রহমান জান্নাতীর দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জান্নাতী আক্তার বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার আড়ুয়াবর্ণী চরপাড়া গ্রামের নিহত ইউনুস আলী শেখের বড় মেয়ে ও চিতলমারী আলিয়া মাদ্রসার মেধাবী ছাত্রী এবং ২০২৩ সালের দাখিল পরীক্ষার্থী। মেয়েকে ঘিরে কৃষক পিতার অনেক স্বপ্ন ছিল। কিন্তু স্বপ্ন পূরণের আগেই তাঁকে নিতে হল বিদায়।
গত শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টার সময় আমড়া গাছের ডাল কাটাকে কেন্দ্র করে ভাতিজা হোসাইন শেখের (২৫) লাঠির আঘাতে চাচা ইউনুস আলী শেখ (৪১) নিহত হন। ময়না তদন্ত শেষে গত কাল শনিবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে জান্নাতীর বাবার দাফর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
বাগেরহাটের চিতলমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ এইচ এম কামরুজ্জামান জানান, জান্নাতীর পরীক্ষায় যাতে কোন ধরনের বিগ্ন না ঘটে সে ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। জান্নাতীর বাবা ইউনুস আলী শেখ হত্যা কান্ডের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে হোসাইন শেখ ও তাঁর মা বেবিয়া বেগম ওরফে বেবি (৪৫) কে আটক করা হয়েছে। এদিন রাতে নিহতর ভাই মোঃ সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে হোসাইন শেখ ও বেবিয়া বেগম ওরফে বেবির নামে থানায় মামলা দায়ের করেন।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) সকালে মা ও ছেলেকে আদালতে এবং নিহতের মরদেহ বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে থানা পুলিশ। বিকেলে নিহত ইউনুস আলী শেখের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবর স্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
চিতলমারী আলিয়া মাদ্রাসা সুপার মোঃ ইদ্রিসুর রহমান জানান, ২০২৩ সালের দাখিল পরীক্ষার্থীদের মধ্যে তাঁর মাদ্রসায় জান্নাতী আক্তার সবার সেরা। তিনি জান্নাতীর জন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন।