নওগাঁয় জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে দোয়া করার অভিযোগ উঠেছে মসজিদের এক ইমামের বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে শহরের তাজের মোড় শহীদ মিনার চত্বরে পৌর আওয়ামী লীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি সাঈদীর জন্য তিনি দোয়া করেন। পরে বিকেলে বিশেষ ক্ষমতা আইনে পূর্বের একটি মামলায় ওই ইমামসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শহরের পার-নওগাঁ বায়তুল মামুর জামে মসজিদের ইমাম মোয়াজ্জেম হোসেন। আরেকজন তাজের মোড় এলাকার রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার বিকেলে নওগাঁ শহরের তাজের মোড় শহীদ মিনার চত্বরে দোয়া মাহফিল ও খাদ্য বিতরণের আয়োজন করে পৌর আওয়ামী লীগ। স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে এ কর্মসূচি চলাকালীন বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের শহিদ সদস্যদের জন্য দোয়া করেন ইমাম মোয়াজ্জেম হোসেন। দোয়ার একপর্যায়ে তিনি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। ওই মুহূর্তে উপস্থিত নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়লেও তিনি দোয়া না থামিয়ে চালিয়ে যান। দোয়া শেষে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা মোয়াজ্জেম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে পার্শ্ববর্তী রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমানের অনুরোধে দোয়া চেয়েছেন বলে জানান। পরে ঘটনাস্থল থেকে ওই ইমাম ও রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ীকে আটক করে পুলিশ।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি তুহিন মোল্লা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবার্ষিকীর পবিত্র অনুষ্ঠানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির জন্য ইমামের দোয়া চাওয়ার বিষয়টি একেবারেই অপ্রত্যাশিত ছিল। তাৎক্ষণিক তাকে থামিয়ে দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের ইন্ধনে তিনি এ কাজ করেছেন বলে ওই মুহূর্তে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহম্মেদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। তার মুঠোফোনে মেসেজ পাঠিয়েও এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিশেষ ক্ষমতা আইনে পূর্বের একটি মামলায় মোয়াজ্জেম হোসেন ও হাফিজুর রহমানের সম্পৃক্ততা থাকায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার (১৬ আগস্ট) সকালে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ গ্রেপ্তারের ঘটনায় সাঈদীর জন্য দোয়া চাওয়ার কোনো যোগসূত্র নেই বলেও দাবি করেন তিনি।