যিনি মানুষের সৎ চরিত্রের সনদ দেন তার চরিত্রই ঢাকা পড়েছে কালিমার প্রলেপে। রিলিফ-স্লিপ দেওয়ার নামে স্কুলছাত্রী, গৃহিনী এমনকি বিধবা নারীদেরও ফাঁদে ফেলে চালান যৌন নির্যাতন। জনপ্রতিনিধি শুধু নন, শিক্ষকও তিনি। এসব ঘটনায় ধরা পড়লেও প্রশাসনের নীরবতায় স্বপদে বহাল অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান।
প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার নামে ধর্ষণের ভিডিও ধারণের পর ভাইরালের ভয় দেখিয়ে টানা আট মাস এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার হন সদরের লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বাদল। রিলিফসহ নানা সুবিধা দেওয়ার নামে নারীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে নির্যাতন করতেন, গ্রেফতারের পর বাদল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ সাধারণ মানুষের।
এর আগে ২০১৭ সালে নিজের স্কুলের শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে গেলেও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও লেংগাবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে বহাল ছিলেন অভিযুক্ত বাদল। সবকিছু জেনেও ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি বলে জানালেন শিক্ষা কর্মকর্তা। আর ইউএনও দায়সারাভাবে বললেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার আলমগীর হোসেন বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ থেকে আমাদের বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হলে আমরা সেটা করব।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রাফিউল আলম বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। আশা করছি তারা ব্যবস্থা নেবেন।
এর আগে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান বাদলের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা না নিলেও এবার ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর উপজেলা কমিটির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে তাকে সাময়িক বহিষ্কারের কথা জানালেন গাইবান্ধা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুর জামান রিংকু।
তিনি বলেন, পুলিশি তদন্তের মধ্য দিয়ে যদি তিনি দোষী সাব্যস্ত হন তবে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য আমরা কেন্দ্রে সুপারিশ করব। ২০১৫ সালে দলীয় প্রার্থীকে পরাজিত করে লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন লেংগাবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বাদল।