চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় দক্ষিণ-পশ্চিম ডুমুরিয়া গ্রামে ‘আল্লাহর ৯৯ নামের স্তম্ভ’ উদ্বোধন হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় এ স্তম্ভ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন কচুয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির এবং কচুয়া পৌরসভার মেয়র মো. নাজমুল আলম স্বপন।
বায়তুল আমান জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তফা কামাল মিয়াজী ‘আল্লাহর ৯৯ নামের স্তম্ভ’ নির্মাণের জন্য প্রথমে উদ্যোগ নেন। এরপর তাঁর বড় ছেলে আব্দুল হান্নান মিয়াজী ও স্থানীয়দের অর্থয়ানে প্রায় ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে স্তম্ভটি নির্মাণ হয়।
এদিকে, আল্লাহর ৯৯ নামের স্তম্ভ উদ্বোধন পর থেকে দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা এটি দেখতে আসছেন। বিশেষ করে রাতে আল্লাহর নামের স্তম্ভটি আলোকসজ্জার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়।
ব্যবসায়ী আবদুল হান্নান মিয়াজী বলেন, “দক্ষিণ-পশ্চিম ডুমুরিয়া বায়তুল আমান জামে মসজিদের সামনে ‘আল্লাহর ৯৯ নামের স্তম্ভ’ নির্মাণ করা হয়েছে সওয়াবের উদ্দেশে। এখানে রাস্তা দিয়ে যেসব লোকজন হাঁটাচলা করবে, তারা দেখবে, পড়বে। এতে তাদের যেমন সওয়াব হবে এবং নির্মাণে জড়িতেরাও সওয়াব পাবে। এটি উচ্চতায় প্রায় ৪০ ফুট। এটি নির্মাণে প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। আমি নিজে অর্থায়ন করেছি, পাশাপাশি স্থানীয় লোকজনও যার যার অবস্থান থেকে সহযোগিতা করেছেন।’
বায়তুল আমান জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম মিয়াজী বলেন, ‘আমার ছোট ভাই মোস্তফা কামাল আল্লাহর ৯৯ নামের এই স্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। দেশে এ ধরনের স্তম্ভ আরও কয়েকটি আছে। সেগুলো দেখেই সে অনুপ্রেরণা পায়। এরপর বিষয়টি সন্তান আব্দুল হান্নানকে জানায়। ছেলেও তার সঙ্গে একমত হয় এবং নির্মাণ কাজ শুরু করে। আলহামদুলিল্লাহ, নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন মানুষ এটি দেখবে, আল্লাহর নাম স্মরণ করবে, এটাই আমাদের বড় পাওনা।’
রফিকুল ইসলাম মিয়াজী আরও বলেন, “দেশের অন্যান্য অঞ্চলে যে ‘আল্লাহর ৯৯ নামের স্তম্ভ’ নির্মাণ হয়েছে, সেখানে সরকারি অর্থায়ন ছিল। আমরা সম্পূর্ণ নিজেদের অর্থায়নে নির্মাণ করেছি। এখন এটি রক্ষণাবেক্ষণে যদি সরকারের পক্ষ থেকে কোনো অর্থায়ন করা হয়, তাহলে আমরা গ্রহণ করব। কারণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এটির ক্ষয়ক্ষতি হলে মেরামত করার প্রয়োজন হবে। আমরা আর্থিক অনুদানের বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রের মাধ্যমে সরকারের নিকট আবেদন করব।”
উদ্যোক্তা মো. মোস্তফা কামাল মিয়াজী বলেন, ‘মসজিদ নির্মাণ করার পর নিজেদের মধ্যে চিন্তা হয়—একটা স্মরণীয় কিছু নির্মাণ করার। তখনই আল্লাহর ৯৯ নামখচিত স্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করি। আসা-যাওয়ার পথে আল্লাহকে স্মরণ করার জন্যই মূলত এটি নির্মাণ করা। চাঁদপুরে এই স্তম্ভ প্রথম নির্মিত হয়েছে।’
কচুয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির বলেন, ‘আমি অত্যন্ত খুশি ও আনন্দিত। আমি চাই—বাংলাদেশের জন্য প্রত্যেকটি উপজেলায় এভাবে আল্লাহর ৯৯টি নামের স্তম্ভ তৈরি করা হোক। আমরা বাংলাদেশে একে অপরের প্রতি সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণের মাধ্যমে বেঁচে আছি এবং আগামী দিনে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাব।’
কচুয়া পৌরসভার মেয়র মো. নাজমুল আলম স্বপন বলেন, ‘কচুয়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে আল্লাহর ৯৯টি নামের স্তম্ভ তৈরি করায় আমি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই। আমি দোয়া করি—আল্লাহকে সার্বক্ষণিক স্মরণ করার জন্য প্রতিটি উপজেলায় এমনিভাবে যেন আল্লাহর ৯৯টি নাম স্তম্ভ তৈরি করা হয়।’