বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, একটা সময় ছোট ছোট শিশু-কিশোররা রাস্তায় দাঁড়িয়ে বলেছিল, ‘থামুন এখানে রাষ্ট্র মেরামতের কাজ চলছে।’ আসুন আমরা সেই কাজে নেমে পড়ি। চলুন রাষ্ট্র মেরামতের কাজে উদ্যোগী হই। এ লড়াইয়ে আমরা সফল হবোই। এটা কোনো ব্যক্তি বিশেষের লড়াই নয়, সমগ্র দেশের গণতান্ত্রিক মানুষের লড়াই।
সোমবার রাতে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘ থামাও নারী ও শিশু নির্যাতন, ফেরাও সুশাসন-চাই গণতন্ত্র, চাই আইনের শাসন’ শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আইনের শাসন চাইলেই পাওয়া যায় না। এটাকে অর্জন করতে হয়। গণতন্ত্রের জন্য রাজপথে যদি মরতে হয় চলেন মরি। যে দেশে বসবাস করবে আমাদের সন্তানরা। আমরা যদি ব্যর্থ হই; আমাদের গালাগাল দেবে। চিতা-কবরে গিয়ে থুতু দিবে। সম্পদ? এটা সন্তানের জন্য সম্পদ না। তারা চায় রাষ্ট্র সঠিক পথে চলুক। যেখান থেকে তারা তাদের মেধা খাটিয়ে অর্থ উপার্জন করবে।
তিনি বলেন, পুলিশের সহযোগিতায় যে সরকার হয়, তাদের শাসন করার নৈতিক অধিকার তো সেই সরকার হারিয়ে ফেলে। সে কারণে পুলিশ নিয়ন্ত্রণে নেই। ব্যক্তি বিশেষ পুলিশ খারাপ হলেও সবাই তো খারাপ না। পুলিশ তো অপরাধীকে ধরতে চায়। কিন্তু এক ব্যক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছায় দেশ চললে পুলিশের তো কিছু করার থাকে না।
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, সুশাসন কখন আসে? যখন একটা জবাবদিহি সরকার ক্ষমতায় থাকে। এখন যারা ক্ষমতায় আছেন তারা অপরাধীদের আশ্রয় দেয়, নারী ও শিশু নির্যাতনকারীদের আশ্রয় দেয়। সন্ত্রাস ও দুর্নীতিবাজদের আশ্রয় দেয়। এই মহামারী করোনার মধ্যেও নারী নির্যাতন বন্ধ হয়নি। আসলে সব মূল্যবোধ আজ শেষ হয়ে গেছে। এই অবস্থার দেশে আইনের শাসন ও জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলা প্রসঙ্গে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান বলেন, তার ওপর হামলার তদন্ত নিয়ে র্যাব একটা বলল, সেটা মানুষ বিশ্বাস করল না। এরপর পুলিশ আরেক রকম কথা বলল। সেটাও মানুষ বিশ্বাস করল না। তার মানে এ রকম একটা ঘটনা নিয়েও জনগণকে বিভ্রান্তি করা হচ্ছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ বলেন, দেশের চলমান নারী ও শিশু নির্যাতন,আইনের শাসন ও গণতন্ত্র অনুপস্থিত থাকায় আমরা উদ্বিগ্ন। কারণ দেশের সুশীল সমাজ ও বিভিন্ন এনজিও সংস্থার মুখ বন্ধ। রাজনৈতিক দলগুলো কথা বলে। কিন্তু একটি নির্বাচিত সরকারের সামনে যেভাবে কথা বললে কাজ হবে,
একইভাষায় একটি অনির্বাচিত সরকারের সামনে কথা বললে কাজ হবে না। আমাদের আত্মসমালোচনাও করতে হবে। কেউ যদি প্রশ্ন করে আপনি আপনার নেত্রী খালেদা জিয়ার জন্য কী করেছেন। তিনি তো মিথ্যা ভিত্তিহীন মামলায় গ্রেফতার হলেন? কোনো উত্তর দিতে পারব না।
সংগঠনের সদস্য সচিব ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীর সঞ্চলনায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সরফত আলী সপু, তাইফুল ইসলাম টিপু, মীর নেওয়াজ আলী, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ,
বিলকিস ইসলাম, কয়েস লোদী প্রমুখ।