March 29, 2024, 9:08 pm

গিনেস বুকে ভ্রমণকন্যা আজমেরি

  • Last update: Wednesday, March 17, 2021

মোশাররফ হোসেনঃ ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটা সময় আমি আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলাম, এরপর ভ্রমণই আমাকে সুন্দর জীবন দিয়েছে। ডিপ্রেশনে ভুগলে আত্মহত্যার মতো পথে না হেঁটে; ভ্রমণের পথে হাঁটা উচিত, জীবনকে উপভোগ করতে পারবে’- আলাপচারিতায় এমনটিই বলছিলেন ১১৫টি দেশ ভ্রমণ করা কাজী আসমা আজমেরি। বাংলাদেশের পাসপোর্ট দিয়ে ১১৫টি দেশ ভ্রমণ করে তাক লাগিয়েছেন পুরো বিশ্বকে, নাম লেখিয়েছেন গিনেস বুকেও। পুরো বিশ্ব ভ্রমণ করতে চান এই ভ্রমণকন্যা বাংলাদেশের পাসপোর্ট দিয়েই। ২০১০ সালে ভিয়েতনামে ভ্রমণ করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হন। ইমিগ্রেশনের যাওয়ার পর তাকে রিটার্ন টিকিট দেওয়া হয়নি বরং বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেখার পর ভিয়েতনামের ইমিগ্রেশনের জেলে ২৩ ঘণ্টা বন্দি করে রাখা হয় তাকে। সেই আক্ষেপ থেকেই তিনি বিশ্বের সব দেশ ভ্রমণের চিন্তা করেন, বাংলাদেশের পাসপোর্ট দিয়েই। আলাপচারিতায় তিনি বলেন, আমার কাছে বাংলাদেশের পাসপোর্ট থাকার কারণে জেল খাটতে হয়েছে। তখন ভাবি আমাকে এমন কিছু করতে হবে যেন দেশের বাইরের মানুষ বাংলাদেশের পাসপোর্ট সম্মানের চোখে দেখে, আমার মতো ভ্রমণে গেলে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়। বাংলাদেশিরা শুধু শ্রমিক হিসেবেই বিভিন্ন দেশে যায় না, ভ্রমণ করতেও যায়। বিশ্বদরবারে এই ইতিবাচক ধারণা তৈরি করতে নিজে ভ্রমণ করেন এবং নিয়মিত ভ্রমণে উৎসাহ দেন তরুণ প্রজন্মকে। আজমেরি বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমি খুব দুরন্ত ছিলাম, ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছে ছিল প্রবল। ছোটবেলার সেই আকাঙ্ক্ষা থেকেই বিশ্ব ঘুরে দেখার ইচ্ছেটা জাগে। প্রথমে গিয়েছিলাম থাইল্যান্ডে।

নীল সমুদ্র দেখার পর আমার মনে হয়েছিল ভ্রমণের জন্য যত টাকা খরচ হয়েছে এই সমুদ্র দেখার পর সব উঠে গেছে, এক কথায় থাইল্যান্ডের সৌন্দর্যে হারিয়ে গিয়েছিলাম। এরপর নেপালে যাই, হিমালয় দেখার পর পুরো বিশ্বের সৌন্দর্য আমাকে টানতে থাকে। তখন থেকে আমি পৃথিবীর নানা দেশে যাওয়ার ভিসা সংগ্রহের লক্ষ্যে নামি। ভ্রমণের টাকা কীভাবে জোগান? প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি আমি চাকরি করতাম আর টাকা জমাতাম। সেই টাকা দিয়েই আমি ভ্রমণ করি। পড়াশোনা শেষ হলে আমি এক-দেড় বছর চাকরি করি আর ছয় মাস ভ্রমণ করি। আজমেরি জানান, নারী হিসেবে তাকে কতটা বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছে, সমাজে শুনতে হয়েছে নানান ধরনের কথা। তিনি বলেন, ‘আমার আত্মীয়রা আমাকে নিয়ে কানাঘুষা করত। যেসব আত্মীয় আমাকে নিয়ে বিভিন্ন কথা বলত, আমিও তাদের এড়িয়ে চলতাম। অনেকে ফোন করে বলত দেশের বাইরে আমি কোথায় থাকছি।

তখন হোটেলে থাকার কথা জানাতাম। তারা সমালোচনা করত।’ প্রায় এক যুগের মতো সময় ধরে তিনি বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের সংস্কৃতি, প্রকৃতি, দেশের মানুষ সম্পর্কে জানাচ্ছেন। ১১৫তম দেশ গ্রিসে লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়ে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে তিনি দেশে ফেরেন। তার ভ্রমণের সংগৃহীত সামগ্রী দিয়ে লাইব্রেরিও তৈরি করেছেন, যেটার খরচ হয়েছে আট লাখ টাকা। কাজী আসমা আজমেরি বলেন, বিশ্ব অনেক বড়, জীবনে অনেক কিছু দেখার আছে, দেখানোর আছে, শেখার আছে এবং শেখানোর আছে।

সংগ্রহঃ সমকাল

Drop your comments:

Please Share This Post in Your Social Media

আরও বাংলা এক্সপ্রেস সংবাদঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© 2023 | Bangla Express Media | All Rights Reserved
With ❤ by Tech Baksho LLC