
আবু তালহা, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার তাঁতশিল্পসমৃদ্ধ পাইকোশা এলাকায় অনুমোদনবিহীন অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে উঠেছে সুতা রং করার ডাইং হাউস। অধিকাংশ ডাইং হাউস এর পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই। এ কারণে মিলের রং ও বিভিন্ন ক্ষতিকর কেমিক্যালের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে আশপাশের খাল, বিল, পুকুর ও নদীর শাখাসহ আবাদি জমিতে। ফলে জনস্বাস্থ্য ব্যাপক হুমকিতে রয়েছে।
দিনের আলোতে প্রসেস মিলের বর্জ্যের গন্ধ তেমন বোঝা না গেলেও সন্ধ্যার পর বাতাসে দুর্গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পরে। প্রসেস মিলের কেমিক্যালের বর্জ্যের গন্ধে আশেপাশের মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছে। এদিকে সরকারী নিদের্শনা অনুযায়ী ইটিপি প্লান ছাড়া ডাইং পরিচালনার ক্ষেত্রে কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রায় সবগুলো ইটিপি প্লান ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার পাইকোশা বাজারে খালের পাড়ে মেসার্স মারুফ কালার ডাইং হাউজ, মেসার্স সরকার ট্রেডার্স এন্ড মার্চরাইজ এ ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি ড্রয়িং হাউস কোন প্রকার কাগজপত্র ছাড়াই চলছে এবং এসব কারখানার ক্ষতিকর বর্জ্য সরাসরি গিয়ে খালের পানিতে মিশে যাচ্ছে। বর্জ্যের দুর্গন্ধে পরিবেশ দূষিত হয়ে আশপাশের মানুষের বসবাসের অনুপযোগী
হয়ে পড়েছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রসের মিলের রংয়ের পানি যদি টিউবওয়ালের পানির সাথে মিশে যায়। আর সেই পানি যদি কোন মানুষ পান করে তাহলে চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবেন। বিশেষ করে যদি গর্ভবতী মায়েরা পান করেন তাহলে, তারা বিকলঙ্গ ও প্রতিবন্ধী শিশু জন্ম দিতে পারেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদাত জানিয়েছেন, প্রসেস মিলের ক্ষতিকর কেমিক্যাল মিশ্রিত বর্জ্য গুলো কৃষিজমির মাটির গুণগত মান নষ্ট করে এছাড়াও ফসল উৎপাদন কমে আসে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেরিনা সুলতানা বলেন, এসব ডাইং হাউজ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এছাড়াও এর ফলে মানুষের শরীরে রোগ ব্যাধি সৃষ্টি হচ্ছে। বারবার নিষেধ করার পরেও যত্রতত্রভাবে যে সব কারখানা গড়ে উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সিরাজগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তর এর কর্মকর্তা এডি আব্দুল গাফ্ফার জানিয়েছেন, এই বিষয় গুলো নিয়ে নিয়োমিত অভিযান চলছে। গত ৬ মাসে সিরাজগঞ্জে পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া প্রতিষ্ঠান গুলোর বিরূদ্ধে অভিযান চালিয়ে ৪০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। কামারখন্দে যে গুলো অবৈধ সুতা প্রসেস মিল রয়েছে তাদের তালিকা করে অভিযান পরিচালনা করা হবে।