করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে গত ৮ মার্চ থেকে কাতার-বাংলাদেশ আকাশ যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘ তিন মাস পর আজ বুধবার প্রথমবারের মতো বিশেষ ব্যবস্থায় কাতার থেকে বাংলাদেশে ফেরার পথ ধরছেন ৪১২ জন প্রবাসী। তাঁরা দেশে যাওয়ার জন্য এরই মধ্যে কাতারের বাংলাদেশ দূতাবাসে নিবন্ধন করেছেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ ফ্লাইট আজ বুধবার ৪১২ প্রবাসীকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে দোহা ত্যাগ করবে। রাত সাড়ে ১০টায় এটি কাতারের হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করবে। ঢাকায় পৌঁছাবে কাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে। বিমানের স্টেশন ম্যানেজার আবু কাইসার মাহমুদ ইলিয়াস প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
যাত্রীদের কেউ কেউ কাতার থেকে ইস্যু করা করোনামুক্তির স্বাস্থ্য সনদ নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের আশা, এর ফলে দেশে পৌঁছানোর পর তাঁদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে না। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো নির্দেশনা আছে কি না, সেটি জানা যায়নি।
বিমানের ৭৭৭-৩০০ মডেলের এই উড়োজাহাজে ৩৫টি বিজনেস ক্লাস ও ৩৮৪টি ইকোনমি ক্লাসের আসন রয়েছে। যাত্রীদের মধ্যে কাতারে বসবাসরত বাংলাদেশি পরিবার ও সাধারণ শ্রমিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রবাসীরা রয়েছেন।
তবে বিমানের এই ফ্লাইটে আসন বণ্টন ও যাত্রী বহনের বেলায় সিট ফাঁকা রাখা সম্পর্কিত কোনো নিয়ম অনুসরণ করা হচ্ছে না। এ রকম কোনো নির্দেশনা নেই বলে জানিয়েছেন বিমানের স্টেশন ম্যানেজার আবু কাইসার।
এর আগে একটি ফ্লাইটে কাতার থেকে ১৬ জন আটকে পড়া বাংলাদেশি ঢাকায় পৌঁছেছিলেন। তবে সেটি কোনো বিশেষ ফ্লাইট ছিল না।
কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমদ বলেন, ‘কাতারের পক্ষ থেকে কাউকে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য কোনো চাপ নেই। যাঁরা স্বেচ্ছায় অনেক দিন ধরে যেতে চাচ্ছিলেন এবং দূতাবাসে নিবন্ধন করেছিলেন, তাঁদের জন্য এই ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যেহেতু নিবন্ধনকারীদের সংখ্যা বেশি, তাই বাকিদের জন্য আমরা আরেকটি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করব।’
১৫ জুন থেকে কাতার এয়ারওয়েজের দোহা থেকে ঢাকায় যাত্রী বহন করার কথা রয়েছে। তবে আপাতত বাংলাদেশ থেকে কেউ কাতারে প্রবেশের সুযোগ না পেলেও ট্রানজিট যাত্রী হিসেবে দোহায় বিমানবন্দরে অবতরণ করতে পারবেন।
আগামী ১ আগস্ট থেকে কাতারে প্রবাসীদের প্রবেশ শুরু হবে বলে জানিয়েছে কাতার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সুপ্রিম কমিটি। ৮ জুন রাতে দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান কমিটির মুখপাত্র লুলুয়া আলখাতের। এ সময় তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে কেবল কম ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো থেকে বিদেশিরা কাতারে আসার সুযোগ পাবেন। এ ক্ষেত্রে কাতার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে ১ সেপ্টেম্বর থেকে স্বাভাবিকভাবে যে কেউ কাতারে প্রবেশ করতে পারবেন।
শিগগিরই কাতারে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া বাংলাদেশি বন্দীসহ অন্য বাংলাদেশিদের নিয়ে কাতার এয়ারওয়েজের আরেকটি ফ্লাইট ঢাকায় যাবে বলে জানা গেছে।