করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে টালমাটাল ভারত। সংক্রমণ বেড়েছে ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোতেও। কিন্তু করোনা সংক্রমণের তালিকায় ব্যতিক্রম দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভুটান। সেখানে এখন পর্যন্ত করোনায় মাত্র একজনের মৃত্যু হয়েছে। খবর ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের।
এদিকে আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনার সংক্রমণ শুরুর দিকে ভুটানের রাজধানী থিম্পুর হাসপাতালে সংক্রমিত হয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়। তারপর আর করোনায় কোনো মৃত্যু নেই দেশটিতে। দৈনিক সংক্রমণও নিয়ন্ত্রণে। সবশেষ শনিবার ভুটানে আক্রান্তের সংখ্যা ১১ জন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনস্বাস্থ্যে বিশেষ জোর দেওয়ার কারণেই ভুটানে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দেশটিতে মোট ৩৩৭ জন চিকিৎসক ও তিন হাজার স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছে। এত কম সংখ্যক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়েও করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সফল হচ্ছে ভুটান।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। ভুটান করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে। শুরু হয় উপসর্গের ভিত্তিতে নমুনা পরীক্ষা। ওই বছরের ৬ মার্চ ভুটানে প্রথম আক্রান্তের খবর মেলে। সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ৩০০ জনকে চিহ্নিত করে নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়। তাদের নেগেটিভ রিপোর্ট এলেও পাঠানো হয় কোয়ারেন্টিনে। নিয়ন্ত্রিত এমন পরিকল্পনার কারণে ছোট্ট দেশটি করোনা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।
ভুটানের প্রধান অর্থনীতি পর্যটন হওয়া সত্ত্বেও গত বছরের মার্চ থেকে বিদেশিদের আগমন বন্ধ করে ভুটান। প্রায় সব ব্যায়ামাগার, রেস্তোরাঁ, শপিংমল বন্ধ করে দেওয়া হয়। মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহারে করা হয় কড়াকড়ি। যারা বিদেশ থেকে এসেছিলেন, তাদের জন্য সরকারি খরচে থাকার ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
কোনো উপসর্গ দেখা দিলেই যাতে সঙ্গে সঙ্গে সরকারি কোয়ারেন্টিন সেন্টারে যাওয়া যায়, তার ব্যবস্থাও করা হয়। ভুটানে চালু করা হয় ১৪-২১ দিনের কোয়রান্টিনে থাকার নিয়ম, যাতে সামান্যতম সংক্রমণেরও সম্ভাবনাও না থাকে। বিপুল হারে পরীক্ষা শুরু করে ভুটান।
এ ছাড়া করোনাকালে যাদের উপার্জন কমেছে, তাদের ভিটামিন ট্যাবলেটসহ ওষুধ, খাবার, পাঠানো থেকে শুরু করে সব ব্যবস্থা করা হয় ভুটানে। শুরু থেকেই প্রশাসন কড়া হাতে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করায় এখনো করোনা থেকে অনেকটাই মুক্ত দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট দেশটি।