করাচি স্টক এক্সচেঞ্জে চালানো হামলার নেপথ্যে ভারত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। মঙ্গলবার (৩০ জুন) পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে তিনি দাবি করেন, এই বিষয়ে পাকিস্তানের কোনও সন্দেহ নেই। ইমরান খানের দাবি, ২০০৮ সালের মতো মুম্বাই হামলার মতো ঘটনা করাচিতে ঘটাতে চেয়েছিল ভারত। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত সোমবার (২৯ জুন) সকালে হামলার কবলে পড়ে পাকিস্তানের করাচি স্টক এক্সচেঞ্জ ভবন। চার সশস্ত্র হামলাকারী ভবনের প্রবেশ মুখে গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিরাপত্তাকর্মী ও কর্মকর্তাদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে তিন নিরাপত্তা কর্মী এবং পুলিশের এক সাব ইন্সপেক্টর নিহত হয়। পরে নিরাপত্তা বাহিনীর পাল্টা অভিযানে হামলাকারীদের মৃত্যু হয়।
ওই ঘটনার জন্য ভারতকে দায়ী করে মঙ্গলবার পার্লামেন্টে ইমরান খান বলেন, ‘মুম্বাইয়ে যা ঘটেছিল, সেই একই ঘটনা তারা করাচিতে ঘটাতে চেয়েছিল; তারা অনিশ্চয়তা ছড়াতে চেয়েছিল। আমাদের কোনও সন্দেহ নেই যে, এটা ভারত করেছে।’ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ২০০৮ সালে মুম্বাইয়ের সন্ত্রাসী হামলার দিকে ইঙ্গিত করে এই মন্তব্য করেন। ওই হামলায় ১৬০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। ওই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে থাকে ভারত।
করাচির হামলায় নিহত পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষী প্রশংসা করে তাদের ‘পাকিস্তানের বীর’ আখ্যা দেন ইমরান খান। তিনি বলেন, ‘তারা আত্ম বিসর্জন দিয়ে বড় ধরণের ঘটনা প্রতিহত করেছে। আমাদের অস্থিতিশীল করতে ভারত ওই ঘটনার পরিকল্পনা করেছিল।’
হামলাকারীদের কাছে বিপুল অস্ত্র ও বিস্ফোরক ছিল জানিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন তারা বহু মানুষ জিম্মি করতে চেয়েছিল। ইমরান খান বলেন, ‘আমার মন্ত্রিসভা এবং এর মন্ত্রীরা সকলেই জানে যে, আমাদের সব সংস্থাই অতিরিক্ত সতর্ক রয়েছে। আমাদের সংস্থাগুলো অন্তত চারটি বড় ধরণের সন্ত্রাসী হামলার চেষ্টা প্রতিহত করেছে। এর মধ্যে দুটি ইসলামাবাদে চালানোর চেষ্টা হয়।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত…এটা আমাদের বিশাল জয়।’
উল্লেখ্য, সোমবারের হামলার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর দায় স্বীকার করে পাকিস্তানে বেআইনি ঘোষিত বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। সশস্ত্র এই গোষ্ঠীটি বেলুচিস্তানের স্বাধীনতার দাবিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তবে হামলার পর এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের প্যারামিলিটারি রেঞ্জার্সের প্রধান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এর মধ্য দিয়ে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র’ এর হতাশার প্রতিফলন দেখা গেছে।