বল হাতে শুরুটা করলেন নাসুম। শেষের দিকে মোস্তাফিজ চমক। নিউজিল্যান্ডকে আটকে রাখা গেল মাত্র ৯৩ রানে। লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মাঝে ছন্দপতন হলেও দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ পৌঁছে গেল জয়ের বন্দরে।
চতুর্থ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পেল ৬ উইকেটের মধুর জয়। এই জয়ে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে স্মরণীয় সিরিজ করায়ত্ত করলো টাইগাররা, তাও এক ম্যাচ হাতে রেখে। সিরিজের ব্যবধান এখন ৩-১।
বুধবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ড তিন বল হাতে রেখে অল আউট হয় ৯৩ রানে। জবাবে বাংলাদেশ জয়ের বন্দরে পৌঁছায় ৫ বল হাতে রেখে। উইকেট হারায় মাত্র ৪টি।
সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ৮ রানে ম্যাককঞ্চির বলে অ্যালেনের হাতে ক্যাচ দেন ওপেনার লিটন দাস। ১১ বলে তিনি করেন ৬ রান। সাকিব-নাঈম ভালোই হাল ধরেছিলেন। কিন্তু তাতে কিছুক্ষণ পর বাধ সাধেন আজাজ প্যাটেল। দলীয় ৩২ রানে বিদায় নেন সাকিব আল হাসান। ৮ বলে ৮ রান করে লাথামের স্টাম্পিংয়ের শিকার তিনি। একই ওভারের শেষ বলে বিদায় নেন ক্রিজে কিছুক্ষণ আগেই নামা মুশফিকুর রহিম। তিন বল খেলে খুলতে পারেননি রানের খাতা। প্যাটেলের বলে হয়ে যান বোল্ড।
প্যাটেলের জোড়া আঘাতের পর শঙ্কায় পড়া বাংলাদেশকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন নাঈম ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এই জুটি দলকে নিয়ে যান ৬৭ রান পর্যন্ত। দুর্ভাগ্যজনক রান আউট ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। ৩৫ বলে একটি করে চার-ছক্কায় ২৯ রান করেন তিনি।
এরপর দলকে দেখেশুনে জয়ের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন মাহমুদউল্লাহ। সাথে ছিলেন হার্ড হিটার আফিফ হোসেন। শেষ পর্যন্ত এই জুটিই দলকে পৌঁছে দেয় জয়ের বন্দরে। ক্যাপ্টেন্স নক ইনিংস খেলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৪৮ বলে এক চার ও এক ছক্কায় ৪৩ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ১০ বলে ৬ রানে অপরাজিত থাকেন আফিফ হোসেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে ওপেনার রাচিন রবীন্দ্রকে সাইফউদ্দিনের ক্যাচ বানান নাসুম আহমেদ। দলীয় ১৬ রানে বিদায় নেন আরেক ওপেনার ফিন অ্যালেন। ৮ বলে ১২ রান করে তিনিও নাসুমের শিকার।
এরপর অবশ্য দলের হাল ধরেন টম লাথাম ও উইল ইয়ং। কিছুদূর এগোনোর পর এই জুটিতে ভাঙন ধরান মেহেদী হাসান। স্টাম্পিংয়ের শিকার কিউই অধিনায়ক টম লাথাম। ২৬ বলে তিনি করেন ২১ রান।
এরপর আবার স্পিনার নাসুম আহমেদের জোড়া আঘাত। দলীয় ৫২ রানে তিনি ফেরান হেনরি নিকোলস (১) ও কলিন ডি গ্রান্ডহোমকে (০)। ৫২ রানে পাঁচ উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ডকে এরপর পথ দেখান একমাত্র ইয়ং। বাকিরা ছিলেন যাওয়া-আসার মিছিলে।
শেষের দিকে কিইউ শিবিরে হানা দেন দুই পেসার মোস্তাফিজ ও সাইফউদ্দিন। তিন বল বাকি থাকতে নিউজিল্যান্ড অল আউট হয় ৯৩ রানে।
দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৮ বলে ৪৬ রান করেন ইয়ং। তার ইনিংসে ছিল পাঁচটি চার ও একটি ছক্কার মার। বাকিদের মধ্যে কেউ ছুতে পারেনি দুই অঙ্কের রান।
বল হাতে দারুণ করে বাংলাদেশের স্পিনার নাসুম আহমেদ। ৪ ওভারে দুই মেডেন নেন তিনি। ১০ রানের বিনিময়ে তুলে নেন চারটি উইকেট। এটি নাসুমের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। চারটি উইকেট পান মোস্তাফিজুর রহমানও। ৩.৩ ওভারে তিনি দেন ১২ রান। সাইফউদ্দিন ও মেহেদী হাসান নেন একটি করে উইকেট। ৪ ওভারে ২৫ রানে উইকেটশূন্য সাকিব আল হাসান। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে উইকেটের দেখা পেলেন না তারকা এই অলরাউন্ডার।