সমগ্র ইতালিতে এই মুহূর্তে ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’ হচ্ছে ‘বাংলাদেশের ভুয়া করোনা সার্টিফিকেট স্ক্যান্ডাল’। গোটা ইতালিতেই এখন বাংলাদেশ থেকে ফেরা যাত্রীদের ন্যাক্কারজনক ঘটনা নিয়ে সমালোচনা চলছে।
রোম থেকে প্রকাশিত ইতালির অন্যতম শীর্ষ এবং পুরনো দৈনিক ‘ইল মেসেজ্জারো’ পত্রিকায় আজকের প্রধান শিরোনাম ছিলো “দাল বাংলাদেশ কন তেস্ত ফালসি” অর্থাৎ “বাংলাদেশ থেকে ভুয়া টেস্ট সহকারে”। আরেক নামকরা দৈনিক ‘লেগো’ খবরের শিরোনাম করেছে ‘সাড়ে তিন হাজার টাকায় জ্বর ছাড়াই বাংলাদেশ ত্যাগ’। আর বিশ্ববিখ্যাত ইয়াহু নিউজের পার্টনার ‘ইয়াহু ফিনাঞ্জা’ লিখেছে, বাংলাদেশে জ্বর নিয়েও দেশ ছাড়তে মাত্র ৩৬ ইউরো বা সাড়ে তিন হাজার টাকার প্রয়োজন। বাংলাদেশে দুর্নীতিবাজ চিকিৎসকরা ভুয়া ‘করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট’ বানিয়ে দেন যা দিয়ে বিমানবন্দরের চেক পার হয়ে দেশত্যাগ করা যায়।
পত্রিকাগুলোতে বাংলাদেশের দুর্নীতিবাজ লোকদের সরাসরি দায়ী করা হয়েছে কোভিড-১৯ টেস্ট না করিয়ে নগদ অর্থের বিনিময়ে করোনা না থাকার ভুয়া সার্টফিকেট ধরিয়ে দেয়ার জন্য।
খবরগুলোতে বলা হয়, গত ৬ই জুলাই বাংলাদেশ হতে বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটে ইতালি ফিরে আসেন ২৭৪ জন যাত্রী। সেদিন রাজধানী রোমের প্রধান বিমানবন্দর লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি’র ৫ নাম্বার টার্মিনাল ফিল্ড হাসপাতালে রূপ নেয় শুধু বাংলাদেশ থেকে আসা চার্টার্ড ফ্লাইটের যাত্রীদের তাৎক্ষণিক টেস্ট করাতে।
সেখানে ৩৬ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। তাদের কাছে ছিল জাল সনদ। ওই ৩৬ যাত্রীর আইসোলেশন নিশ্চিত করা হয় এবং বাকিদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য পাঠানো হয় অভিজাত হোটেলে।
ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্তো স্পেরাঞ্জা গতকাল জরুরী নোটিশে জানিয়েছেন এক সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ থাকবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুইজি ডি মাইও এমন পরিস্থিতির কঠোর সমালোচনা করছেন। এদিকে ইতালির সাধারন জনগণও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের সাথে ফ্লাইট যোগাযোগ কেবল এক সপ্তাহ নয়, কয়েক বছরের জন্য বন্ধের দাবী তুলেছে তারা।
বিরোধী দলগুলোও সরকার এবং বিদেশী অভিবাসীদের স্বার্থ সুরক্ষায় কাজ করা রাজনৈতিক দলগুলোর বিপক্ষে ব্যাপক জনরোষ জাগিয়ে তুলছে।
ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশী এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়ে প্রবেশের ঘটনা শুধু ইতালি নয়, যে কোন দেশেই বাংলাদেশীদের প্রবেশের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
আপনার মতামত দিন