করোনা ভাইরাসের মহামারি পরিস্থিতিতে সৌদি আরবে সীমিত পরিসরে শুরু হওয়া হজের অংশ হিসেবে আরাফাত ময়দানে সমবেত হচ্ছেন হাজিরা। এবারের হজে সুযোগ পাওয়া ১০ হাজার হাজি বৃহস্পতিবার এই পবিত্র ময়দানে সমবেত হবেন। মুসল্লিদের দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ, রহমত প্রাপ্তি ও নিজেদের গোনাহ মাফের জন্য আল্লাহ তাআলার দরবারে অশ্রুসিক্ত নয়নে ফরিয়াদ জানাবে সমবেত ধর্মপ্রাণ মুসলমান। সব হাজির কণ্ঠে থাকবে একই ধ্বনি- ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান-নিমাতা লাকা ওয়াল মুলক’। এদিকে আরাফাত ময়দানে হাজিদের স্বাগত জানানোর সব প্রস্তুতি শেষ করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, হাজিদের জন্য পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা রেখেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত গরমজনিত অসুস্থতায় আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আরাফাত ও মুজদালিফা থেকে হাজিরা চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত এসব জায়গায় থাকবে ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালও। করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়াদের জরুরিভিত্তিতে আলাদা করে ফেলার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। তবে হজে পর্যন্ত কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি বলে জানিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
সৌদি কর্তৃপক্ষের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে এবারে আরাফাত ময়দানে খুতবা দেবেন শেখ আবদুল্লাহ বিন সুলাইমান আল-মানিয়া।
হজে অংশ নেওয়া হামিদে হালিমি নামে এক নারী হাজি আরব টাইমসকে বলেন, সৌদি আরবে আসার পর থেকেই হজ পালনের স্বপ্ন দেখেছি, আর শেষ পর্যন্ত তা সত্যি হচ্ছে। আমার দলে ২০ জনের মতো নারী রয়েছে। আর শুরু থেকেই নারীদের সঙ্গেই থেকেছি। হোটেল থেকে মিকাত ও হারাম পর্যন্ত সব জায়গায় আমরা নারীরা এক সঙ্গেই ছিলাম। এমনকি যেসব নারী স্বামীদের সঙ্গে এনেছেন তাদেরও নারীদের সঙ্গে রেখেছেন। এখানে একটি চমৎকার বোনসুলভ অভিজ্ঞতা হয়েছে। তিনি জানান হাজিরা প্রত্যেকেই দুরত্ব মেনে চলা সংক্রান্ত নির্দেশনা মেনে চলছেন।
হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ আরাফাত ময়দানে সমবেত হওয়া। আগের দিন মিনায় রাত্রি যাপনের পর জিলহজ্ব মাসের নয় তারিখের সকাল থেকেই আরাফাত ময়দানে জড়ো হতে শুরু করেন মুসল্লিরা। মিনা থেকে ১০ কিলোমিটার হেঁটে এখানে যেতে হয়। আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা ও ইবাদত-বন্দেগি চলবে সূর্য ডোবার আগ পর্যন্ত। সূর্যাস্তের পর হাজিরা মাগরিবের নামাজ আদায় না করেই আরাফাতের ময়দান থেকে রওনা দেবেন মুজদালিফার দিকে। সেখানে পৌঁছে মাগরিব ও এশার নামাজ একসঙ্গে আদায় করবেন। খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করবেন হাজিরা। তারপর মিনার জামারায় (প্রতীকী) শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য পাথর সংগ্রহ করবেন। পরদিন (শুক্রবার) সকালে ফজরের নামাজ শেষে হাজিরা আবার ফিরে আসবেন মিনায়। জামারাতে পাথর নিক্ষেপ ও পশু কোরবানির পর পুরুষরা মাথা মুণ্ডন করে ইহরাম ত্যাগ করবেন। এরপর পবিত্র কাবা শরিফে বিদায়ী তাওয়াফ করে হজের পূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা শেষ করবেন হাজিরা। আরব নিউজ।