একাত্তরে মহান মুক্তিসংগ্রামে আমেরিকা এই জনপদের মানুষের আকাঙ্কার বিপরীতে অবস্থান নিয়েছিলো । তারপর ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেন সৃষ্ট করে ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলকে ভারতের কতিপয় দালালদের হাতে তুলে দিয়েছিলো!
বর্তমানে আমেরিকার বাংলাদেশ নিয়ে নতুন ভিসা পলিসি বাংলাদেশ মানুষের গনতান্ত্রিক মুক্তি সংগ্রামের আকাঙ্কাকে সংহতি জানিয়েছে ।আমেরিকা যে এই কাজ একেবারেই নিস্বার্থভাবে করেছে সেই কথা আমি বলছি না ।তবে, তাদের এই নতুন ভিসা পলিসি বর্তমানে বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ বিরোধী মুক্তি সংগ্রামকে দারুণভাবে যে ভালো কাজ দিবে সেটা নিসন্দেহে বলা যায় ।আমেরিকার এই ভিসা পলিসি পৃর্বেকার সময়ে বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া আমেরিকার পাপকে অনেকটা লঘু করবে তাও নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।
আমেরিকার এই ভিসা পলিসি রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশের জন্য লজ্জার ;তবে দানবকৃতির এই ফ্যাসিবাদকে সরাতে বাংলাদেশর সাধারণ মানুষের এই ভিসা পলিসিকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানানো ছাড়া আর কোন রাস্তা খোলা নেই । বাংলাদেশের ক্ষমতাকেন্দ্রীক রাজনৈতিক নেতৃত্বের শুধু মাত্র দেহখানি যে বাংলাদেশে পড়ে রয়েছে অপরদিকে তাদের পুরো মন-মস্তিস্ক যে আমেরিকায় পড়ে রয়েছে আমেরিকার ভিসা পলিসির পর তা আবারও পরিস্কার হলো।
অথচ, দূর্নীর্তি বিরোধী অবস্থান এবং গনমানুষের সমর্থন নিয়ে রাজনীতি করলে আমেরিকার ভিসা পলিসি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতৃত্বকে ভীতো করার কথা ছিলো না ।শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করতে যে সময় এবং অপকৌশল প্রয়োগ করেছেন ;তার এই অপচেষ্টার সময় থেকে পঞ্চাশ ভাগ সময় ও সুকৌশল যদি উনি দেশের গনতান্ত্রিক ভীতকে শক্তিশালী করতে ব্যায় করতেন তাহলে হয়তোবা উনার দলের বাইরেও সাধারণ মানুষের মাঝে একটা শক্ত ভিত্তি তৈরী হয়ে যেতো! গণমানুষের সমর্থন থাকলে কিভাবে যে মাথা উুচু করে রাজনৈতিক নেতৃত্ব চলতে পারেন তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোগান ।
যাহোক,বাংলাদেশ নিয়ে আমেরিকা এই নতুন পলিসি বাংলাদেশের চলমান গনতান্ত্রিক সংগ্রামে এক বড় শক্তি যোগাচ্ছে । এখন কথা হচ্ছে আমেরিকার এই ভিসা পলিসি যাতে ফ্যাসিবাদ পতনের পর পরবর্তী রাজনৈতিক সরকারের উপর যেন সমানভাবে বহাল থাকে! কারন,আমরা সাধারন মানুষ ফ্যাসিবাদের স্থায়ী পতন চাই ;ফ্যাসিবাদের জার্সি বদল নয়! আমেরিকার এই ভিসা পলিসি আমাদের জাতীয় মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করলেও আমাদের চরম দূর্নীতিগ্রস্থ ও বর্বর রাজনৈতিক নেতৃত্বেকে সভ্যতা-বভ্যতায় ফিরিয়ে আনতে কিছুটাও হলেও সাহায্যে করবে।
কারন, পাকিস্তানি সামরিক রেজিমের অধিনে উনিশো সত্তর সনে নির্বাচন হারিয়ে য়াওয়া গনতন্ত্র উদ্বারের জন্য রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়া এই জাতিকে যেন আর ভোট ও ভাতের অধিকারের জন্য আর কোন মায়ের বুক খালি করতে না হয়।
লেখক: কলামিস্ট ও সাবেক প্রভাষক