সংযুক্ত আরব আমিরাতে রাস আল খাইমাহ বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল এন্ড কলেজের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া নাগরিক সংবর্ধনায় আবুধাবির সফরকালীন আবাসস্থল থেকে ভিডিও কনফারেন্সে থেকে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সভা থেকে রাস আল খাইমায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন৷
প্রবাসীদের উদ্দেশ্য বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে সম্পর্কের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আমিরাতের জাতির পিতা শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি৷
শেখ হাসিনা বলেন, ধ্বংসস্তুপ থেকে এই জাতিকে সংবিধান উপহার দেওয়া থেকে শুরু করে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সকল পদক্ষেপই নিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৫ ই আগস্ট আমাদের পরিবার ও পুরো জাতিকে আবারও সর্বহারা করা হলো৷ তখন থেকে বাংলাদেশে রাজত্ব করেছিল খুনিরা৷
তিনি বলেন, পরপর তিন বার ক্ষমতায় এসে দেশের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। দেশে এক টানা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই দেশের উন্নতি করা সম্ভব হচ্ছে৷ বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে। আজকে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশকে মর্যাদা করে, সমীহ করে। করোনা কালীন সময়ে দেশের পাশাপাশি প্রবাসীদেরকেও প্রনোদনা দিয়েছি৷ প্রবাসীরা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছেন৷ প্রবাসীরা বাংলাদেশের পাশাপাশি যে দেশেই আছেম সে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখছেন৷ বিশ্ব দরবারে আমাদের হারানো মর্যাদা ফিরে পেয়েছি৷
শেখ হাসিনা বলেন, করোনা কালীন সময়ে, আমিরাতসহ বিশ্বের যেসকল দেশ আমাদের দেশের প্রবাসীদের বিনামূল্যে টিকা দিয়েছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। যাদের ভিসা আছে তারাও টিকা পেয়েছে আবার যাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই তাদেরকেও টিকা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, শিগগিরই বাংলাদেশে ফাইভ জি চালু হবে৷ দেশ ডিজিটাল হওয়ার ফলে প্রবাসীরা সহজে দেশে যোগাযোগ করতে পারেন৷ দেশে এখন শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ আরও কিভাবে উন্নয়ন হবে তার অবকাঠামো তৈরি করে দিয়ে গেলাম৷ দক্ষ হয়ে বিভিন্ন দেশে আজ শ্রম বাজার উন্মুক্ত আছে, তবে অবৈধভাবে কেউ যাবেন না৷ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিদেশ যেতে ঋণ দেওয়া হচ্ছে৷
প্রবাসীদের পক্ষ থেকে মিশনে পাসপোর্ট তৈরির ব্যবস্থার ব্যাপারে নজরে আনলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাসপোর্ট পেতে দেরি হয়েছে করোনার কারণে। আমরা টিম করেছি যাতে কোথাও পাসপোর্ট সমস্যা না হয়৷
বিমানবন্দরে হয়রানির ব্যপারে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এই সমস্যার সমাধানে পদক্ষেপ নিয়েছি৷ বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে বিমানবন্দর নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ঢাকা বিমানবন্দরে ফ্লাইট বেশি হওয়ায় একটু সমস্যা হলেও টার্মিনাল ৩ চালু হলে এসব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
তিনি দেশ গড়ার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে৷ সবার সহযোগিতা নিয়েই দেশ এগিয়ে যাবে। প্রবাসীরা যে দেশেই থাকবেন সেই দেশের আইন মেনেই চলতে হবে৷ তখন দেশের সম্মান রক্ষার্থে কোনো বিপত্তি ঘটবে না৷
প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে আবুধাবি থেকে বক্তব্য রাখেন আইয়ুব খান, দুবাই কনস্যুলেট প্রান্ত থেকে মিলন হাওলাদার ও বাংলাদেশ ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী অর্থি রাণী দাস।
এসময় রাস আল খাইমাহ প্রান্তে বঙ্গবন্ধু ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়কমন্ত্রী ইমরান আহমেদ।
দুবাইস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট প্রান্তে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, কনস্যুলেট জেনারেল বিএম জামাল হোসেন।