আব্দুল্লাহ আল শাহীন, ইউএইঃ সংযুক্ত আরব আমিরাতে যেসকল হুন্ডি ব্যবসায়ী আছে তাদের তালিকা করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগসহ অবৈধ পথে দেশে টাকা পাঠানোর সকল পথ বন্ধে নানা উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ দূতাবাস ও কনস্যুলেট জেনারেল দুবাই৷
বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণ ও অবৈধ পথ বন্ধের লক্ষ্যে গতকাল রবিবার (১২ জুন) শারজায় বঙ্গবন্ধু হলে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল দুবাইয়ের আয়োজনে মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয়৷ আমিরাতের বিভিন্ন ব্যাংক, এক্সচেঞ্জ, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় শুরুতে হুন্ডি প্রতিরোধে পরিকল্পনার কথা জানান কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের ভূমিকা অপরিসীম। প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। বিশেষ করে আরব আমিরাত দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে করোনা, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ কিংবা যেকোনো অস্থিতিশীল সময়েও বাংলাদেশের অর্থনৈতিকে সচল রেখেছেন।’
জামাল হোসেন বলেন, ‘গত মে মাসে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রেরণে প্রথম স্থানে ছিল আমিরাত। মে মাসের মোট প্রেরিত রেমিট্যান্স ছিল ১৮৮ কোটি ৫৩ লাখ মার্কিন ডলার, তারমধ্যে কেবল আমিরাত থেকে গিয়েছে ৩৩ কোটি ৮৬ লাখ মার্কিন ডলার। সকলে যদি বৈধ পথে দেশে টাকা পাঠান তাহলে এই সংখ্যা আরও বহুগুণ বৃদ্ধি পেত। একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে সকলকে দায়িত্বশীল হতে হবে। বিশেষ করে প্রবাসীদের সচেতন হতে হবে। ‘
বাংলাদেশ সমিতির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন তার আলোচনায় বলেন, রেমিট্যান্স প্রেরণ করে প্রবাসীরা যেন সুফল পায় সেই দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। বিমানবন্দরে হয়রানি, বিমান ভাড়া ও সার্ভিসের যেসকল অভিযোগ আছে সেদিকে কর্তৃপক্ষকে নজর দিতে হবে। তিনি হুন্ডি ব্যবসায়ীদের লাগাম টানতে দূতাবাস ও কনস্যুলেটের সকল উদ্যোগে আমিরাত সরকারের নিবন্ধিত সমিতির সহযোগিতা থাকবে বলে জানিয়েছেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে আল হারমাইন গ্রুপের চেয়ারম্যান মাহতাবুর রহমান নাসের সিআইপি বলেন, দেশের রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে আমাদের সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নিজ নিজ কোম্পানির কর্মীদের বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণের জন্য আহ্বান করতে হবে। বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কর্মীদের রেমিট্যান্স সঠিকভাবে পাঠানো নিশ্চিত করতে হবে।
জনতা ব্যাংক, আল ফারদান এক্সচেঞ্জ, জিসিসি এক্সচেঞ্জ, আল রোস্তমানি এক্সচেঞ্জ, ব্রাক ব্যাংকসহ উল্লেখযোগ্য ব্যাংক ও এক্সচেঞ্জের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকেরা আলোচনায় অংশ নিয়ে হুন্ডি বন্ধের লক্ষ্যে বিভিন্ন পরামর্শ দেন৷
পরামর্শে সবচেয়ে গুরুত্ব পেয়েছে হুন্ডি ব্যবসায়ীদের তালিকা করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ, সার্ভিস চার্জ ছাড়া টাকা প্রেরণের সুবিধা, প্রণোদনা ৪-৫ শতাংশ করা, দেশে গ্রাহকদের হয়রানি বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ করা।
কনস্যুলেটের শ্রম সচিব ফকির মনোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন, জনতা ব্যাংকের দুবাই ও শারজাহ ব্রাঞ্চের ম্যানেজার যথাক্রমে আব্দুল মালেক ও শওকত আকবর ভূইয়া, আল ফারদান এক্সচেঞ্জের সুলতান মাহমুদ (হেড, করিডর বিজনেস), ব্রাক ব্যাংকের প্রতিনিধি সায়েদ আবু নাছের, ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী বাবুল, ইঞ্জিনিয়ার আবু জাফর, নাছির উদ্দীন কাউসার প্রমুখ।