প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতির একটি হ্যালোথেরাপি। সংযুক্ত আরব আমিরাতে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে এই চিকিৎসা। এটি এক ধরনের লবণ চিকিৎসা। লবণের গুহা তৈরি করে বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় এই চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল আইন শহরে তৈরি করা হয়েছে মানবসৃষ্ট লবণ গুহা। এখানেই নানা ধরনের অসুস্থতায় প্রচলিত চিকিৎসার বিকল্প হিসেবে হ্যালোথেরাপির প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে।
হ্যালোথেরাপির সময় সল্ট স্প্রে করে কিংবা লবণে শরীর ঢেকে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী চলে থেরাপি সেশন। সংশ্লিষ্টদের দাবি, এর মাধ্যমে শ্বাস এবং ত্বকজনিত নানা রোগ নিরাময়ের পাশাপাশি বিষণ্ণতা দূর করে মানসিক প্রশান্তি আসে।
এই থেরাপির সময় লবণে পুরো শরীর অন্তত দুই থেকে তিন ঘণ্টা ঢেকে রাখতে হয়। সেখানে তৈরি করা হয়েছে, স্টোন সল্ট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে একটি বিশালাকার গুহা। যেখানে কেউ সল্ট স্প্রে গ্রহণ করে কিংবা লবণে শরীর ডুবিয়ে নিচ্ছে থেরাপি।
কর্তৃপক্ষ ছাড়াও অনেক রোগী এই পদ্ধতিতে চিকিৎসায় সুফল মেলার দাবি করেছেন। চিকিৎসা নেয়া এক ব্যক্তি বলেন, এখানে আসলেই আমি ভালো বোধ করি। আমার শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল, এখানে কয়েকটি সেশন করার পর এখন অনেকটা ভালো আছি। আসলে, প্রথম সেশন নেয়ার পরই আমি অনেকটা সুস্থ বোধ করছি। সেদিন আমার ভালো ঘুমও হয়। পরে আমি মোট ছয়টি সেশন সম্পন্ন করেছি। এখন আমার অ্যাজমা অনেকটাই কমেছে।
খবরে বলা হয়েছে, স্টোন সল্ট দিয়ে এই পদ্ধতির চিকিৎসা শুরু হয়েছিল ১৮০০ সালের দিকে। সেই সময় লবণ খনিতে কাজ করা শ্রমিকরা প্রথম এর উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারেন। পরবর্তীতে লবণ চিকিৎসা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়।
চিকিৎসকদের দাবি, বিশেষ এই লবণের সংস্পর্শে আসলে শ্বাসকষ্ট দূর হয় ও ভালো ঘুম হয়। এছাড়া, সল্ট থেরাপি ত্বকের সংক্রমণ রোধ, মানসিক চাপ কমানো ও বিষন্নতা দূর করতেও সহায়তা করে।
আমিরাতে ন্যাচারোপ্যাথিক ফিজিশিয়ান খালেদ আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, অ্যাজমা রোগীরা এখানে সবচেয়ে বেশি আসে। তাদের জন্য এখানে মোট ছয়টি সেশন রয়েছে। লবণের স্প্রে থেকে নিঃশ্বাস গ্রহণের পর, তাদের পুরো শরীর লবণে আবৃত করা হয়। এছাড়া, সোরিয়াসিস, একজিমার মতো জেনেটিক ও ক্রনিক রোগেরও চিকিৎসা করি আমরা। এ জন্য দরকার হয় ১৬টি সেশনের।
তবে এই চিকিৎসা পদ্ধতি ও এর উপকারিতা নিয়ে সন্দিহান অনেক চিকিৎসক। কোনো অসুস্থতায় মূলধারার চিকিৎসা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন তারা। সূত্র: রয়টার্স ও দ্য ন্যাশনাল।