
করোনাভাইরাসের কারণে ব্যাংক খাতে যখন টাকার সংকট, তখন বেসরকারি খাতের প্রথম ব্যাংক হিসেবে ইসলামী ব্যাংকে আমানতের পরিমাণ এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে, যা পুরো ব্যাংক খাতের ৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
মঙ্গলবার (৩০ জুন) ব্যাংকটিতে আমানতের পরিমাণ বেড়ে ১ লাখ ২৪ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। এর সঙ্গে ১ কোটি ৪৩ লাখ গ্রাহকের ব্যাংকে পরিণত হয়েছে ইসলামী ব্যাংক। ২০১৯ সালের শেষে ব্যাংকটির আমানত ছিল ৯৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা, ২০১৮ সালের শেষে ছিল ৮২ হাজার ২৫৭ কোটি, ২০১৭ সাল শেষে ৭৫ হাজার ৫০২ কোটি এবং ২০১৬ সালের শেষে ছিল ৬৮ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা। বুধবার (১ জুলাই) ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব উল আলম বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংকের আমানতের বড় অংশই ক্ষুদ্র সঞ্চয়ীদের। সরকারি বা করপোরেট আমানত খুবই কম।’ গত ছয় মাসে পাঁচ হাজার কোটি টাকা আমানত বেড়েছে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা পরিবর্তনের পর ব্যাংকটি সংকটে পড়লেও গত প্রায় এক বছর ধরে আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে ব্যাংকটি।
তবে রাষ্ট্র মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংকের আমানত এখন ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি। যদিও ব্যাংকটির আমানতের উল্লেখযোগ্য অংশই সরকারি খাতের।
ইসলামী ব্যাংক থেকে জানানো হয়েছে, তাদের সারা দেশে ৩৫৭টি শাখা, ৪৩টি উপশাখা, ১ হাজার ২০০টি এজেন্ট আউটলেট রয়েছে। গত জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ৪ লাখ ৭৯ হাজার নতুন গ্রাহক পেয়েছে তারা। এজেন্ট আউটলেটগুলোর গ্রাহক ৭ লাখ ৫৩ হাজার। ফলে গ্রাহক বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ৪৩ লাখ। ২০১৯ সালে হিসাব খোলার ক্ষেত্রে প্রায় ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
বর্তমানে দেশে প্রবাসী আয়ের ৩২ শতাংশ আসছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। রেমিট্যান্স আহরণে ২০১৯ সালের জুন মাসের তুলনায় ২০২০ সালের জুন মাসে ইসলামী ব্যাংকের প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১১৬ শতাংশ। জুন মাসে ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৫৭ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। এছাড়া, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ব্যাংকটিতে আমানত বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
আমানতের সঙ্গে এই ব্যাংকে বেড়েছে ঋণ বিতরণও। ২০১৯ সালের শেষে ব্যাংকটির দেওয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৫ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা। ব্যাংকটির ঋণের মধ্যে শিল্প খাতে ৫৪ শতাংশ, ব্যবসা-বাণিজ্যে ২৯ শতাংশ, আবাসনে ৭ শতাংশ ও ভোক্তাঋণ ৪ শতাংশ।