
সেনাবাহিনীর (অব.) মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলায় টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। মঙ্গলবার শুনানির জন্য আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। এ সময় সাংবাদিকরা ছবি তুলতে দেখে বিরক্ত হয়ে যান বরখাস্ত ওসি প্রদীপ।
এ সময় তিনি বলেন, ‘আমাকে নতুন করে চেনানোর দরকার নেই।’
মঙ্গলবার মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দ্বিতীয় দিন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তাকে বেশ আত্মবিশ্বাসী ও চেহারা হাস্যোজ্জ্বল দেখা গেছে।
এর আগে সোমবার কক্সবাজার জেলার দায়রা জজ আদালতে প্রথম দিনের সেনাবাহিনীর (অব.) মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলার শুনানির সময় কাঠগড়ায় মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।
গ্রেফতার ওই আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কথা বলার ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
তবে তিনি কার সঙ্গে কী বিষয়ে কথা বলেছেন তা জানা যায়নি।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে, আদালত কক্ষের কাঠগড়ার ভেতরে হাঁটু গেড়ে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলছেন বরখাস্ত ওসি প্রদীপ। এ সময় কয়েকজন ব্যক্তি আশপাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
সূত্রে জানা গেছে, ওই সময় দায়িত্বরত এক পুলিশ কনস্টেবল প্রদীপকে মোবাইল ফোনটি সরবরাহ করেছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মোবাইল ফোনে একের পর এক কল আনুমানিক ৩০-৪০ মিনিট কথা বলেছেন বরখাস্ত ওসি প্রদীপ। ওই দিন পরনে ছিল কালো পোলো শার্ট। তবে প্রদীপ কার সঙ্গে কী বিষয়ে কথা বলেছেন তা জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও কয়েকজন আইনজীবী জানান, সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিন বরখাস্ত ওসি প্রদীপ মলিন মুখে আদালতে এলেও পরের দিন খুব আত্মবিশ্বাসী ও হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় তাকে দেখা গেছে। মোবাইলে কথা বলার পরেই প্রদীপ আত্মবিশ্বাসী হয়েছেন কিনা এমন প্রশ্ন অনেকের।
আদালত চলাকালীন কাঠগড়ায় প্রদীপের মোবাইলে কথা বলার বিষয়ে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি ফরিদুল আলম চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, এটি সম্পূর্ণ আইন পরিপন্থী। তবে এ কারণে আদালতের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে না বলে জানান তিনি।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় সোমবার। বুধবার পর্যন্ত টানা তিন দিন এ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
মামলার বাদী নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌসের সাক্ষ্য দিয়ে প্রথম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মঙ্গলবার আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন সাহিদুল ইসলাম সিফাত।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টের গাড়ি তল্লাশি কেন্দ্র করে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ওই বছরের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব ১৫-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল ইসলাম।