তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপির রাজনীতি লাশের ওপরে প্রতিষ্ঠিত, সেই কারণে তারা লাশ সৃষ্টি করতে চায়। আর আগস্ট মাস এলেই তাদের এই প্রবণতাটা আরও বেড়ে যায়। সে জন্য ভোলাতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটিয়েছে বিএনপি। সারা বাংলাদেশে তারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে লাশ সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাবে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের গত কয়েক দিনের উসকানিমূলক বক্তব্যে এটিই প্রমাণিত হয়। তবে জনগণ তাদেরকে সেই সুযোগ দেবে না।’
বুধবার (৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বেতারের চট্টগ্রাম কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন। ভোলায় ছাত্রদল নেতা নিহতের ঘটনায় হরতাল ও একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে সরকার পতনের ডাক দিয়েছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর জবাবে এ কথা বলেন আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির রাজনীতিটা লাশের ওপর প্রতিষ্ঠিত। জিয়াউর রহমান লাশের ওপর পাড়া দিয়েই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। ক্রমাগতভাবে বহু সৈনিকের লাশের ওপর দাঁড়িয়ে দেশ পরিচালনা করেছেন। ১৯ টা ক্যু হয়েছে। শত শত নয়, কয়েক হাজার সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীর কর্মকর্তা এবং জওয়ানকে হত্যা করেছে জিয়াউর রহমান। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকেও হত্যা করেছেন তিনি।’
তিনি বলেন, ‘এরপর খালেদা জিয়াও একই পথ অনুসরণ করেছে। ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে কীভাবে অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষকে পুড়িয়ে লাশ বানিয়ে সেই লাশ আবার পুড়িয়ে অঙ্গার করে ফেলেছে। লাশের ওপর দাঁড়িয়েই তাদের রাজনীতি।’
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ভোলায় তারা (বিএনপি) যে মিছিল ও সমাবেশ করবে তা পুলিশকে জানায়নি। এরপরও পুলিশ তাদেরকে সহযোগিতা করেছে। তারা দোকানপাট ভাঙচুর ও পুলিশের প্রতি ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলো, বিএনপির সমাবেশ থেকে পুলিশের ওপর গুলি ছোড়া হয়েছে। সেই গুলিতে পুলিশের একজন কনস্টেবল আহত হয়েছে, আরেকজন কনস্টেবলকে ধরে নিয়ে গিয়ে বিএনপি অফিসে মারধর করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আত্মরক্ষার্থে পুলিশকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়েছে। সেখানে তাদের দুজন কর্মী মৃত্যুবরণ করেছে। আগে যিনি মৃত্যুবরণ করেছেন ডাক্তারের রিপোর্ট হচ্ছে, তার হেড ইনজুরিতে (মাথায় আঘাত) মৃত্যু হয়েছে। হেড ইনজুরি ইট-পাটকেলের আঘাতেই হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। ইট পাটকেল তো বিএনপিই ছুড়েছে।’
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র একটি ঐতিহাসিক বেতার কেন্দ্র। চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকেই স্বাধীনতার ঘোষণা প্রথম পাঠ করা হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধারা চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের ট্রান্সমিটার নিয়েই প্রথম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র চালু করে। পরে ভারতের পক্ষ থেকে একটি ট্রান্সমিটার তাদেরকে দেওয়া হয়। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র হচ্ছে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র। ট্রান্সমিশন যাতে আরও ভালো হয় সে জন্য সলিমপুরে (সীতাকুণ্ড) স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যাতে দেশের বেশিরভাগ জায়গায় চট্টগ্রাম বেতারকেন্দ্র শোনা যায়।’
এ সময় বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের পরিচালক এ এস এম আবুল হোসেন, সিনিয়র প্রকৌশলী ভাস্কর দেওয়ান ও আঞ্চলিক বার্তা নিয়ন্ত্রক হীরক খান উপস্থিত ছিলেন।