তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: গত তিন মাস আগে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী জোনাকি (ছদ্মনাম) সাথে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের কেউটি হাওর এলাকার অলিউর রহমানের ছেলে মো. আলী আহমদ।
সম্প্রতি জোনাকির (১৩) সাথে দেখা করার কথা বলে রাজনগরে আসে আলী আহমদ (২০)। গাড়িতে ঘুরাঘুরির নামে তাকে নিয়ে চলে যায় সিলেটের কানাইঘাটে। এ ঘটনায় জোনাকিকে যখন পাওয়া যাচ্ছিলো না, তখন খোঁজাখুঁজি করে মেয়েকে না পেয়ে রাজনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করলে প্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নিশ্চিত হয়ে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে পুলিশ গিয়ে আলী আহমদ’কে গ্রেপ্তার করে। এঘটনায় অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জোনাকির সাথে দেখা করে আলী আহমদ। গাড়িতে করে ঘুরাঘুরি করার একপর্যায়ে তাকে নিয়ে চলে যায় কানাইঘাট উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের দূর্গম পাহাড়ি এলাকার কেউটি হাওরে। এদিকে স্কুল থেকে বাড়ি না ফেরায় মেয়েটির দরিদ্র পিতা সমাজের লোকলজ্জার ভয়ে মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি গোপন রেখে তাকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকেন।
ঘটনার ৮দিন পেরিয়ে গেলেও মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে গত সোমবার রাজনগর থানায় নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরী করেন। জোনাকিকে খোঁজার দায়িত্বভাড় উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সওকত মাসুদ ভূঁইয়ার উপর। তদন্তে বেরিয়ে আসে রাজনগর উপজেলার মুন্সিবাজার এলাকায় এসে অপহরণের দিন সকাল সাড়ে ৯টার সময় আলী আহমদ জোনাকির বাড়ির মুঠোফোনে কল দিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করে।
ফোন নাম্বার শনাক্ত করে প্রযুক্তির সহায়তায় আলী আহমেদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে মঙ্গলবার রাতে কানাইঘাটের কেউটি হাওরের দূর্গম এলাকায় অভিযানে যান উপ-পরিদর্শক মো. সওকত মাসুদ ভূঁইয়া ও উপ-পরিদর্শক মো. সুলেমান আহমেদসহ পুলিশের একটি দল। সেখানে ছেলে-মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রাজনগর থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে নাবালিকা মেয়েটির কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত জেনে মেয়েটির বাবা লিখিত অভিযোগ করলে মো. আলী আহমদের নামে রাজনগর থানার মামলা (নং-১২, তারিখ- ২৩/০২/২০২৩ইং) দায়ের করেন।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আমরা মেয়েটিকে উদ্ধারের কাজ শুরু করি। মেয়েটিকে উদ্ধারের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের কানাইঘাট উপজেলার কয়েক কিলোমিটার দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় পায়ে হেটে পাড়ি দিতে হয়েছে।
এঘটনায় অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। আসামিকে আজ বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মেয়েটির মানসম্মানের কথা বিবেচনা করে তার নাম ঠিকানা পুরোপুরি গোপন রাখা হয়েছে বলেও জানান ওসি।