নোয়াখালীতে জব্দ করা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থানায় নেওয়ার পথে অটোরিকশা নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছেন চালক। এ সময় অটোরিকশা থেকে পড়ে আহত হয়েছেন ট্রাফিক পুলিশের এক কনস্টেবল। এ ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবলের করা মামলায় অটোরিকশাচালককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রবিবার (২৭ জুন) দুপুর ১২টার দিকে পৌরসভার মাইজদী টাউন হল মোড়ের প্লাট রোডে এ ঘটনা ঘটে। আহত ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবলের নাম পরিতোষ দেওয়ান। সোমবার (২৮ জুন) দুপুরে তার মামলায় আদালতের মাধ্যমে অটোরিকশাচালক ফারুক হোসেনকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এরই মধ্যে এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ কনস্টেবলকে নিয়ে অটোরিকশাটি দ্রুত চলছে। চালক দ্রুত মোড় ঘোরানোর সময় পুলিশ কনস্টেবল ছিটকে রাস্তায় পড়ে যান। পুলিশ কনস্টেবলের সঙ্গে থাকা ছাতাটি অটোরিকশায় ঝুলতে থাকে। এতে চালক অটোরিকশার গতি আরও বাড়িয়ে দিয়ে পালােনোর চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয়রা ধাওয়া করে মেথরপট্টি থেকে অটোরিকশাসহ চালককে আটক করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশ কনস্টেবল প্রিয়তোষ দেওয়ান মাইজদী পৌরবাজার থেকে অটোরিকশা নিয়ে থানার দিকে যাচ্ছিলেন। অটোরিকশাটি গণপূর্ত ভবনের সামনে পৌঁছালে চালক হঠাৎ করে বিপরীত দিকে ঘুরিয়ে কনস্টেবলকে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় কনস্টেবল চিৎকার করলে চালক অটোরিকশাটি নিয়ে প্লাট রোডে ঢুকে পড়েন। তখন কনস্টেবল রাস্তায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন।
আটকের পর চালক ফারুক হোসেন সাংবাদিকদের জানান, এটিএসআই ইউসুফ তার অটোরিকশাটি জব্দ করে পাঁচ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। এ সময় তিনি অনেক অনুরোধ করেও তার মন গলাতে পারেননি। টাকা দিতে না পারায় এটিএসআই অনেক গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে অটোরিকশা থানায় নিতে কনস্টেবল প্রিয়তোষ দেওয়ানকে নির্দেশ দেন।
ফারুক হোসেন আরও জানান, অটোরিকশা থানায় নিয়ে আটকে রাখলে পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। এই চিন্তায় হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কনস্টেবল প্রিয়তোষ অটোরিকশার পেছনের সিট থেকে তাকে মারধর করতে গিয়ে ছিটকে পড়ে যান।
তবে সহকারী শহর উপপরিদর্শক (এটিএসআই) কাজী মো. ইউসুফ বলেন, টাকা দাবির বিষয়টি মিথ্যা। লকডাউনে পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগ কঠোর অবস্থানে থাকায় একই দিন আরও কয়েকটি রিকশা আটক করা হয়েছিল।
নোয়াখালী ট্রাফিক বিভাগের টিআই (প্রশাসন) মো. বখতিয়ার উদ্দিন বলেন, চলমান লকডাউনে প্রধান সড়কে যাত্রী পরিবহন করায় ফারুক হোসেনের অটোরিকশাটি জব্দ করে থানায় নেওয়ার নির্দেশ দেন এটিএসআই ইউসুফ। অটোরিকশাটি থানায় নিয়ে যাওয়ার পথে কনস্টেবল প্রিয়তোষ দেওয়ানকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন চালক। এ সময় অটোরিকশা থেকে ছিটকে পড়ে প্রিয়তোষ আহত হন। স্থানীয়রা চালক ফারুক হোসেনকে আটক করে থানায় সোপর্দ করেছে।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাহেদ উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় পরিতোষ বাদী হয়ে মামলা করেছেন। ওই মামলায় আদালতের মাধ্যমে ফারুককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।